কয়েক মাস স্বাভাবিক থাকার পর আবারও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তুমুল সংঘর্ষ ও গোলাগুলি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে একজন আরাকান আর্মি সদস্য অস্ত্রসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। গত সোমবার সকালে উখিয়ার বালুখালী সীমান্তে জীবন তঞ্চঙ্গা (২১) নামের সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী আত্মসমর্পণ করে।
প্রাণ বাঁচাতে সশস্ত্র আরাকান আর্মির সদস্যরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। জীবন তঞ্চঙ্গার দাবি, আরও প্রায় ৩০০ সদস্য যেকোনো সময় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে।
বিজিবি বলছে, আত্মসমর্পণ করা তরুণ সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্য। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। তার কাছে একটি একে-৪৭ রাইফেল, দুটি ম্যাগাজিন ও ৫২টি গুলি ছিল। আরাকান আর্মির ওই সদস্য নিজেকে জীবন তঞ্চঙ্গ্যা (২১) নামে পরিচয় দিয়েছেন। তার বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গর্জবুনিয়া গ্রামে বলে দাবি করছেন তিনি।
বিজিবি উখিয়া-৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসিম উদ্দিন বলেন, আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক দাবি করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছেন। তার দাবি, ওই ক্যাম্প থেকে আরও অন্তত ৩০০ আরাকান আর্মি সদস্য পালিয়েছেন, যাদের কেউ কেউ যেকোনো সময় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারেন।
টেকনাফে মিয়ানমার সীমান্তে সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে, তবে এখনো সীমান্তে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সীমান্ত এলাকার সচেতন মহলের আশঙ্কা, হঠাৎ বিপুলসংখ্যক সশস্ত্র মানুষের অনুপ্রবেশ ঘটলে দেশের সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘এখনো টেকনাফ সীমান্ত স্বাভাবিক রয়েছে, আরাকান আর্মি অনুপ্রবেশের নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। তবে মিয়ানমারের সিতওয়ে অঞ্চলে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।’
বিজিবি কক্সবাজার-৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম বলেন, শূন্যরেখা থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে গোলাগুলি হয়েছে। তবে কোনো গুলি বাংলাদেশের ভেতরে আসেনি।