বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে চরম নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এই নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি। এদিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাকশালের পরিবর্তে গণতন্ত্র এনেছিলেন জিয়াউর রহমান, সামরিক স্বৈরশাসনের গোরস্তানে গণতন্ত্র এনেছিলেন খালেদা জিয়া, আর ফ্যাসিবাদের জায়গায় তারেক রহমান গণতন্ত্রের সূচনা করবেন।
গতকাল শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তারা এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত এ কর্মসূচির পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায়ও মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের এমন একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল, যেখানে ইঁদুর আর পোকামাকড় দৌড়াত। কয়েকজন জেলার ও ডেপুটি জেলার অন্যায়ভাবে তাকে ছাদের ওপর একটি কক্ষে রেখেছিল। এই নির্যাতনের জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচার হওয়া উচিত। বিএনপির দুর্দিনে দলের নেতৃত্ব দিয়ে খালেদা জিয়া যে ভূমিকা রেখেছেন তা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা যারা কয়েকজন তাদের সঙ্গে কাজ করেছি তারা দেখেছি তার দৃঢ় মনোবল। গণতন্ত্রের প্রশ্নে তার আপসহীন নেতৃত্ব এবং নেতা-কর্মীদের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও স্নেহ তা তুলনাহীন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, যারা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল, তাদের ক্ষমতায় আসতে আবার বহু বছর লেগেছে। মুসলিম লীগ আসতে পারেনি, আওয়ামী লীগের লেগেছিল ২১ বছর। আর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি মাত্র ৯ বছরে আবার ক্ষমতায় এসেছিল। এই অর্জনের মূল কা-ারি দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। সামরিক স্বৈরশাসনের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ইতিহাস তার হাত ধরেই রচিত হয়েছে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। ফ্যাসিবাদের জায়গায় তারেক রহমান গণতন্ত্রের সূচনা করবেন বলে মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহিদ জিয়ার হাত ধরে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। বহু মানুষ ছেড়ে গেছে। কিন্তু দারুণ দুঃসময়ে দলের হাল ধরেছিলেন খালেদা জিয়া। সামরিক স্বৈরশাসনের গোরস্তানে গণতন্ত্র এনেছিলেন তিনি। ফ্যাসিবাদের জায়গায় গণতন্ত্রের সূচনা করবেন তারেক রহমান। তারা সেই শুভ দিনের প্রতীক্ষায় আছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যখন মানুষ সমালোচনা করত, তখনো জন্মদিন উদ্যাপনে উৎসাহ দেননি খালেদা জিয়া। কখনো খালেদা জিয়া জন্মদিন উদ্যাপন করা বা দাওয়াত দেওয়ার মতো কিছু করেননি। তারা নিজেরা সেটা করেছেন। খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্যের জন্য দোয়া চেয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, যত রক্ত ঝরুক, এখনো গণতন্ত্র হাতের নাগালের বাইরে। নির্বাচনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। কারো পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।