- শেওড়াপাড়ায় নারীর রহস্যজনক মৃত্যুতে স্বামীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর কদমতলী রায়েরবাগের মেরাজনগরে তামান্না আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিবারের দাবি, যৌতুকের জন্য নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তামান্না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নায়েব আলীর মেয়ে এবং দেড় বছরের এক কন্যাশিশুর মা। স্বামীর সঙ্গে মিরাজনগরে ভাড়া থাকতেন তিনি। এদিকে রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে চার সন্তানের এক জননীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী সিফাত আলীসহ (৩০) ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কেয়ার পরিবার।
তামান্নার চাচা জিয়াউল হক জিয়া জানান, ২০২২ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়ার পর থেকে স্বামী মোহাম্মদ নয়ন ও শাশুড়ি যৌতুকের দাবিতে তামান্নাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। তামান্নার বাবা বেশ কয়েকবার নয়নকে নগদ টাকা দিয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার পরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থতার খবর পেয়ে বাসায় গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করেন, তামান্না গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন এবং ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামানো হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, দেড় বছরের সন্তান রেখে তামান্না গলায় ফাঁস দিতে পারেন না। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী নয়ন পলাতক। এ ঘটনায় তারা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, গৃহবধূর মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তের জন্য কদমতলী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পলাতক স্বামীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা: রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ফাহমিদা তাহসিন কেয়া নামে চার সন্তানের এক জননীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী সিফাত আলীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলার এজাহার রুজু করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নিহতের স্বামী সিফাত আলীকে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ রোমান।
তিনি বলেন, নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। মামলায় নিহতের স্বামী সিফাত এবং তাদের গাড়িচালকসহ মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সিফাত আলী তার স্ত্রী কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর কৌশলে ফোনকল করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে যান। কেয়ার চার ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
নিহত কেয়ার ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, বুধবার দিনগত রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানান, কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে ‘কেয়া আর বেঁচে নেই।’
এরপর নাজমা বেগম স্বামীসহ দ্রুত ওই বাসায় পৌঁছেন। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন, সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাত সেখান থেকে উধাও হয়ে যান। পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন, সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।