রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ফের যৌথ অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেলের আস্তানায় অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক, বিস্ফোরক দ্রব্য ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- রানা মিঠুন (২৫) ও মো. মোক্তার (৬৩)। দুজনই ওই এলাকায় বসবাস করেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে জেনেভা ক্যাম্পের ৭ নম্বর সেক্টরে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযানে উদ্ধার করা হয় ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা, ১৩টি তাজা ককটেল বোমা, ২৫টি আধা প্রস্তুত ককটেল, ৪০০ গ্রাম গানপাউডার, দুটি সামুরাই তলোয়ার, ১২টি হকিস্টিক, ২৯টি হেলমেট, ২টি ড্রাগন লাইট, ১১ কেজি গাঁজা, ১২ প্যাকেট হেরোইন এবং একটি টাকা গণনার মেশিন।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, বুনিয়া সোহেল রাতে জেনেভা ক্যাম্পে আসবে। তাকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়। তবে বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছামাত্র বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বুনিয়া সোহেলসহ আসামিরা অন্ধকারে পালিয়ে যায়। সংকীর্ণ গলি ও লাগোয়া ভবনের কারণে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ সময় বিপুল পরিমাণ টাকা, মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার হয়।
তিনি জানান, বুনিয়া সোহেলের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, বিস্ফোরক ও মাদকসহ মোট ৩৮টি মামলা রয়েছে। এ বছরের শুরুর দিকেই বুনিয়া সোহেল গ্রেপ্তার হয় কিন্তু ছয় মাস কারাবাসের পরে তিনি অল্প কিছু দিন আগে জামিনে বের হয়। জামিনে মুক্ত হওয়ার পরপরই বুনিয়া সোহেল আবার ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে অপরাধ কার্যক্রম শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই দিন আগে বুনিয়া সোহেলের লোকজন জেনেভা ক্যাম্পে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই দিন রাতে সেনাবাহিনী একটি অভিযান পরিচালনা করে বুনিয়া সোহেলের ১৩ জন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। আজ (গতকাল) অল্পের জন্য বুনিয়া সোহেল হাতছাড়া হয়ে যায়, তবে তাকে এবং অন্য সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বুনিয়া সোহেল ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। পরবর্তী সময়ে উদ্ধার সব মালামাল আইনি প্রক্রিয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।