ধূমপানে বাধা দেওয়ার জের ধরে রাজধানীর মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার এবং বাস কোম্পানিটির এক মালিকের বাসায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার পর একজনকে গ্রেপ্তার করেছে রমনা থানা-পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বলছে, সোহাগ পরিবহনের মালিকদের একজন আলী হাসান পলাশ তালুকদারের বাসার সামনে কয়েকজন ধূমপান করছিলেন। এ সময় দারোয়ান তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। পরে দারোয়ানের সঙ্গে তাদের বাগবিত-া হয়। কিছু পরেই গাড়ি নিয়ে মালিক সেখানে আসলে ওইসব ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদেরও বাগবিত-া হয়। এ সময় কিছু ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপরে রাত ১১টায় ফের প্রায় ৭০ জনের একটি দল লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় তার ভাই ছাড়াও গাড়িচালক, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, দারোয়ান ও মালিকের সঙ্গে তাদের বাগবিত-ার পর তারা চলে যায়। ঘণ্টাখানেক পর অর্ধশতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে আসে। তারা কোম্পানির মালিক ও তার গাড়িচালক, দারোয়ানের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পাশের কাউন্টারে ভাঙচুর করা হয়। তখন সোহাগ পরিবহনের কর্মচারীরা বাধা দিতে এলে তারাও হামলার শিকার হন।
বাস মালিক আলী হাসান পলাশ তালুকদারের ভাই মাজেদুল হক নাদিম বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৬০ থেকে ৭০ জনের একটি দল লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় তার ভাই ছাড়াও গাড়ি চালক, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা তার ভাই পলাশ তালুকদারের বাসার গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল বলেও জানান তিনি।
সোহাগ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক তালুকদার সোহেল বলেন, কাউন্টারের সামনে কয়েকজন ছেলে সিগারেট খাচ্ছিল। সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারের একজন কর্মী তাদের নিষেধ করলে তার ওপর হামলা করে। প্রথমে আমাদের স্টাফ তাদের সেখানে সিগারেট না খেয়ে একটু দূরে গিয়ে খেতে বলেছিল। এ নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু, একপর্যায়ে কাউন্টারের লোকজনের ওপর হামলা করে তারা।
তিনি আরও বলেন, কাউন্টারের পাশেই আমার বাসা। ঘটনার সময় আমার ছোট ভাই (পলাশ তালুকদার) গাড়ি নিয়ে বাসায় ঢুকছিল। ঘটনা দেখে সে সামনে এগিয়ে গেলে তার ওপরও হামলা করা হয়। দুর্বৃত্তরা বাসায় ভাঙচুর করেছে, আমাদের স্টাফদের কুপিয়েছে।
এ ঘটনায় সোহাগ পরিবহনের সিকিউরিটি ইনচার্জ আল-আমিন বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে রমনা থানায় মামলা করা হয়। ঘটনার পর পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে রমনা থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম- পারভেজ হোসেন।
এ বিষয়ে রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক বলেন, সোহাগ কাউন্টারে হামলার ঘটনার পর বৃহস্পতিবার এ পরিবহনের সিকিউরিটি ইনচার্জ আল-আমিন থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পারভেজ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন