নেপালে চলমান আন্দোলনের কারণে দেশটিতে অবস্থানরত সব বাংলাদেশি নাগরিককে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছে কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাস। গতকাল মঙ্গলবার দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
দূতাবাসের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা যেন বাইরে অযথা বের না হন এবং নিজেদের হোটেল বা অবস্থানস্থলে অবস্থান করেন। একই সঙ্গে নেপালে ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে এমন (ইনবাউন্ড) যাত্রীদেরও বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটিতে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস দুটি হটলাইন চালু করেছে। নম্বর দুটি হলো: +৯৭৭ ৯৮০৩৮৭২৭৫৯ এবং +৯৭৭ ৯৮৫১১২৮৩৮১।
গতকাল টানা তৃতীয় দিনের মতো রাস্তায় নেমেছে নেপালের তরুণরা। সরকারের দুর্নীতি, দমননীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন তারা। কারফিউ জারির পরও নতুন বানেশ্বরসহ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকায় ফিরতে পারছেন না ফুটবল দলের সদস্যরা:
নেপাল সময় গতকাল বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ফুটবল দলের ফ্লাইট ছিল। কাঠমান্ডুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলমান থাকায় বাংলাদেশ দল হোটেল থেকে বিমানবন্দরে যেতে পারেনি। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলও বন্ধ কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টে। ফলে বাংলাদেশ দল বিমানবন্দরে পৌঁছালেও গতকাল ফ্লাইটে উঠতে পারত কি না, নিশ্চিত ছিল না।
বাফুফে মিডিয়া বিভাগ দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল নেপাল থেকে নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগে আজ (গতকাল) বেলা ৩টা মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইএ-০৩৭২ ফ্লাইটে দেশে ফেরার কথা ছিল। তবে নেপালের বর্তমান পরিস্থিতিতে যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে। দলের ফেরার বিষয়ে পরবর্তী আপডেট দ্রুত জানানো হবে।
কাঠমান্ডু থেকে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ম্যানেজার আমের খান বলেন, ‘আমরা ঝুঁকি নিয়ে বিমানবন্দর যাইনি। নেপাল আমাদের স্কট (নিরাপত্তা) দিয়ে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে পারেনি। এখন আবার হোটেলে রুম নেওয়া হয়েছে। শুনেছি এয়ারপোর্ট অবরুদ্ধ। নতুন করে টিকিট করাও এখন অনিশ্চয়তা কারণ এখানে পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত।’
কাঠমান্ডুতে গোলাগুলি ও জ্বালাও-পোড়াও চলছে। বাংলাদেশ টিম হোটেলের কাছেই এমন পরিস্থিতি। তবে হোটেলে ফুটবলাররা অবশ্য নিরাপদেই রয়েছেন। হোটেলের সামনে তেমন কোনো সমস্যা এখনো হয়নি।
প্রসঙ্গত, টানা দুই দিনের বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কেপি শর্মা ওলি। এর আগে মঙ্গলবার ভোর থেকে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ সারা নেপালে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এ সময় উত্তেজিত জনতা একাধিক প্রভাবশালী নেতার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। আক্রমণের শিকার হয় ওলি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার বাসভবনও। রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যালয়ও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন