শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ১২:৪৬ এএম

নির্বাচনের আগেই বিরোধ নিষ্পত্তি চান হাইকমান্ড

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ১২:৪৬ এএম

নির্বাচনের আগেই বিরোধ  নিষ্পত্তি চান হাইকমান্ড

** সদর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আচরণে ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যকার বিরোধ যে জটিল আকার ধারণ করেছে। বরিশাল বিএনপিতে এই বিরোধ জিইয়ে থাকলে নির্বাচনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কাসহ অন্তর্ঘাত বাড়তে পারে। বিশেষ করে কিছুদিন আগে বরিশাল সদর উপজেলার কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার পরে স্থানীয় বিএনপিতে বিভাজনের রেখা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই কমিটি ভাঙা নিয়ে বিস্ফোরণোন্মুখ মহানগর বিএনপির নেতারা প্রবীণ রাজনৈতিক মজিবর রহমান সরোয়ারকে দোষারোপ করেছেন। এ ধরনের খেলা বন্ধ করতে মহানগরের নেত্রী মনোনয়নপ্রত্যাশী আফরোজা খানম নাসরিন কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

জানা গেছে, নেতা তারেক রহমানের নির্দেশনার আলোকে বরিশাল সদর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী মজিবর রহমান সরোয়ার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিনকে তলব করেছে কেন্দ্র। গত বুধবার বিভিন্ন সময়ে তাদের ফোন করে বিএনপির হাইকমান্ড বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। কেন্দ্রের ডাকে সাড়া দিয়ে বরিশালের শীর্ষ সারির চার নেতা ঢাকায় অবস্থান করলেও কী কারণে তাদের তলব করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কেউ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন না।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত ১৪ অক্টোবর বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করে কেন্দ্র। জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা ছাড়া কমিটি ভাঙা এবং এই নতুন কমিটির সবাই সরোয়ারপন্থি হওয়ায় বিষয়টি দলীয় ঘরানার প্রতিপক্ষ রাজনীতিকেরা ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেননি। বরং এ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ারকে দুষছেন সাবেক কমিটির নেতারা। বিশেষ করে নুরুল আমিনকে আহ্বায়ক এবং সাইফুল ইসলাম আব্বাসকে সদস্যসচিব করার পাশাপাশি এই কমিটিতে বিতর্কিত সালাম রাঢ়ীকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করায় বিএনপির বড় একটি অংশ ক্ষোভে ফুঁসছে। 

বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের অভিযোগ, সদর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী মজিবর রহমান সরোয়ার অতীতের মতো নোংরা পলিটিকস শুরু করেছেন। ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ভেঙে তিনি তার অনুগত নেতাকর্মীদের প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে নিজের শক্তিবলয় তৈরি করতে চাইছেন। সদর উপজেলার কমিটি ভেঙে তিনি তাতে আওয়ামী লীগের দোসর সালাম রাঢ়ীকে স্থান দিয়েছেন, এতে অনেকেই বিরাগভাজন হয়েছেন।

পূর্বের কমিটির পদধারী নেতা জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, নেতারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের দোসরদের দলে স্থান করে দিচ্ছেন। চরমোনাইয়ের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সালাম রাঢ়ী একজন বিতর্কিত রাজনীতিক, তিনি ২০২১ সালে ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর সমন্বয়কারী ছিলেন। এ ছাড়া সালাম রাঢ়ী আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করারও বহু উদাহরণ আছে। তাকে সেই সময় বিএনপির পক্ষ থেকে শোকজও করা হয়েছিল। এ ধরনের চরিত্রের ব্যক্তিকে দলে পদ দিতে গিয়ে দুর্দিনের ত্যাগী ও নিপীড়িতদের অবজ্ঞা-অবহেলা হচ্ছে, যা দেখে মহানগরের নেতারা নিশ্চুপ থাকতে পারছেন না।

সূত্র জানিয়েছে, আগাম কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই বরিশাল সদর উপজেলার কমিটি ভেঙে দেওয়া এবং এতে সরোয়ার অনুসারীরা স্থান পাওয়ার পরে জেলা ও মহানগর কমিটির নেতারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ দুটি কমিটিও ভাঙতে তিনি তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছেন এমন খবরে মহানগর কমিটির সংক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার ওপর বেজায় চটেছেন। বিশেষ করে মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন গত বুধবার একটি বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি বরিশাল সদর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক এবং সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারও এ নিয়ে সরোয়ারকে এক হাত নিয়েছেন।

নির্বাচন-পূর্ব বরিশাল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এই বিবাদ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশী সরোয়ার, মনিরুজ্জামান, নাসরিন ও জিয়া উদ্দিন সিকদারকে নিয়ে এক টেবিলে বসতে উদ্যোগ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড। নেতা তারেক রহমানের তরফ থেকে এই বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন নীতিনির্ধারণী হিসেবে থাকছেন বলে জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় অবস্থান করছেন জানিয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক রূপালী বাংলাদেশকে বলেছেন, ত্রয়োদশ নির্বাচনে তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশী হওয়ায় এর আগেও একাধিবার কেন্দ্র ডেকেছিল এবং তার মতামত গ্রহণ করেছে। বুধবার ফোন করে ফের ডেকেছে, কিন্তু কী কারণে তা বলা মুশকিল। একই কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা নাসরিনও জরুরি তলব সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে তিনি ধারণা করছেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো বার্তা দেওয়া হতে পারে বৈঠক থেকে।

বৃহস্পতিবার রাতে এই বৈঠক নিয়ে আগাম কোনো মন্তব্য করতে চাইছেন না মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। তবে প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিত এই বিএনপি নেতা রূপালী বাংলাদেশকে জানান, অনুমান করা হচ্ছে, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে কোনো দিকনির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। সেখানে বরিশাল বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধ আলোচনায় অগ্রাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জিয়া উদ্দিন সিকদার ত্রয়োদশ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী নন বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেনের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করে তাকে পাওয়া না গেলেও কেন্দ্রীয় সূত্রগুলো বলছে, গুলশানে বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠকে বরিশালের স্থানীয় নেতাদের অন্তর্কোন্দলের ইস্যুটি আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু হতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে দিকনির্দেশনাও দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এবারের নির্বাচন বিএনপির জন্য বড় ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে, সেখানে নেতাকর্মীদের মধ্যকার ঐক্য না থাকলে বা ভুল করলে খেসারত গোনার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!