রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ডান হাতে পিস্তল ও বাম হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র সামুরাই নিয়ে হামলা করা সেই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল শনিবার স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেনেভা ক্যাম্পে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেল, চুয়া সেলিম, পিচ্চি রাজা, গালকাটা মনু ও ইমতিয়াজ গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে মাদক ব্যবসার স্পট দখল নিয়ে কয়েক দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। এতে গত বৃহস্পতিবার সকালে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নামে এক যুবক নিহত হয়।
এ সংঘর্ষের সময় জেনেভা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান এসকে জিলানী ওরফে কানা জিলানীর ছোট ছেলে এসকে নাসিম পিস্তল ও সামুরাই হাতে হামলা চালায়। তার কাছে থানা থেকে লুট হওয়া আরও কয়েকটি পিস্তল রয়েছে বলেও জানা গেছে। নিহত জাহিদ বুনিয়া সোহেল গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তার পুরো পরিবার বুনিয়া সোহেলের ভাই টুনটুনের মাধ্যমে মাদক বিক্রি করত। স্থানীয়দের দাবি, বুনিয়া সোহেল ও টুনটুন কৌশলে জাহিদকে হত্যা করে অন্য মাদক কারবারিদের নামে মামলা দিয়ে স্পট দখলের চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, আমরা অভিযান চালিয়ে এসকে নাসিমকে গ্রেপ্তার করেছি। সে জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে অস্ত্র হাতে হামলা করেছিল। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তার হাতে থাকা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আশা করছি, দ্রুতই অস্ত্র উদ্ধার করা যাবে।
জেনেভা ক্যাম্পের একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ক্যাম্পের আল ফালাহ গলিতে মাদক স্পট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মূলত বুনিয়া সোহেল ও পিচ্চি রাজার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বুনিয়া সোহেলের সঙ্গে চুয়া সেলিম ও গালকাটা মনু যোগ দেয়। পরবর্তীতে বুনিয়া সোহেলের সহায়তায় গালকাটা মনু ক্যাম্পের ৪ নম্বর সেক্টরে নতুন একটি মাদক স্পট খুলে ব্যবসা শুরু করে। এ নিয়েই বিরোধ বাড়তে থাকে।
স্থানীয়রা আরও জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় বুনিয়া সোহেল মিরপুরের পল্লবী ক্যাম্প থেকে ‘বোম কাল্লু’ নামে এক সন্ত্রাসীকে ককটেল তৈরি করার জন্য ভাড়া করে আনে। গত বুধবার ওই সন্ত্রাসী জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বানাতে গিয়ে আহত হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

