ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ট্রাইব্যুনালের তলবে হাজির হয়ে ক্ষমা চাইলেন জেড আই খান পান্না

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০২:৫২ এএম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে না আসায় তাকে ট্রাইব্যুনালে তলব করা হয়। পরে তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।

গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির হয়ে তিনি ফের শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই না চালানোর বিষয়টি অবহিত করেন। এর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অপারগতার কথা প্রকাশ করেন এবং ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করে তা জানিয়েছেন।

গত ২৩ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানির জন্য ৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়ানোর আবেদন করেন জেড আই খান পান্না এবং ট্রাইব্যুনাল যথারীতি তাকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার আদেশ দেন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ র‌্যাবের টিএফআই সেলে নির্যাতন মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয় দুপুরে।

প্রধান কৌঁসুলি অভিযোগ গঠনের শুনানি করছিলেন। একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নির্দেশ দেন যেন আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে ‘এখনই’ ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলা হয়। এর ১০-১২ মিনিটের মধ্যে পান্না হুইল চেয়ারে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। এ সময় ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান পান্নার কাছে তিনি সুস্থ আছেন কি না জানতে চেয়ে বলেন, আপনি শেখ হাসিনার পক্ষে নিয়োগ চেয়ে অনুমতি পেয়েছেন। কিন্তু আসেননি। আপনার অনুপস্থিতিতে শুনানি করতে হয়েছে। যেটা হয়ে গেছে, এখন আবার তার শুনানি করতে হবে। নিয়ম হচ্ছে, উপস্থিতিতে অভিযোগের শুনানি করতে হয়।

পান্না বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ মামলায় না দাঁড়ানোর জন্য আমি রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনার ক্লায়েন্ট হাজির হবেন না; আপনিও আসবেন না। আপনি নিজেই আগ্রহ দেখিয়েছেন আইনজীবী হওয়ার জন্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অর্ডার দিয়েছি। আপনি না করতে চাইলে ট্রাইব্যুনালে এসে বলতে হবে। এ ছাড়া আপনি এক ভিডিও বার্তায় ট্রাইব্যুনাল নিয়ে মন্তব্য করেছেন যে আপনার ক্লায়েন্ট এই আদালত মানেন না। এ জন্য আপনিও মানেন না। এটা কি আপনি বলতে পারেন?’

জেড আই খান পান্না বলেন, আমি আনকনডিশনাল অ্যাপোলজি চাই। তখন ট্রাইব্যুনাল ফের জানতে চান, তিনি এ মামলায় লড়বেন কি না। জবাবে না বলেন আইনজীবী পান্না। এ সময় প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, তিনি একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা অবমাননাসূচক। এরপর ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আমরা আশা করব, আপনার কাছ থেকে সহায়তা পাব।’