নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, দেশের স্বার্থে একটি ভালো নির্বাচনের বিকল্প নেই, আর স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য। তিনি বলেন, ‘ভুয়া সাংবাদিকরা যেন কোথাও কার্ড নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য আমরা কিউআর কোড ব্যবস্থা রাখছি।’
গতকাল বুধবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) সাংবাদিকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমকর্মীদের জন্য এই বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে।
ভিন্ন মাত্রার নির্বাচনে প্রস্তুতি :
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন ভিন্ন মাত্রার হতে যাচ্ছে। গত দেড় দশকে নির্বাচনি ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনই তার উত্তরণ জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দায়িত্ব শুধু কমিশন নয়, সবার।
সাম্প্রতিক মক ভোটিংয়ের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে ব্যালট ব্যবস্থায় সময় ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘ভোটারের প্রবাহ ঠিক রাখতে একজনের পর আরেকজনকে কেন্দ্রে ঢুকতে গড়ে দেড় মিনিট সময় লাগে। আর ভেতরে ভোট দিতে একজনের গড়ে লেগেছে ৩ মিনিট ৫২ সেকেন্ড।’
গণভোটে প্রশ্নপত্র পড়তে সময় লাগায় ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে আগামী ৭ ডিসেম্বরের কমিশন সভায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে আমরা কেমন দেশ ও গণতান্ত্রিক পথযাত্রা দেখতে চাইÑ তার একটি টোন সেট করবে এই নির্বাচন।’ একই সঙ্গে ভোটের দিন গণমাধ্যমের অবাধ বিচরণ নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতি দেন ইসি সানাউল্লাহ।
‘শতাব্দীর ভালো নির্বাচন চাই’ : ইসি সচিব
একই অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, কমিশন এখন নির্বাচনের জোয়ারে রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নির্বাচন কমিশনও চায় শতাব্দীর সেরা নির্বাচন উপহার দিতে।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চারটি প্রশ্নের একটি উত্তর দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও পুরো প্যাকেজ বিবেচনায় নিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের ম্যানিফেস্টোতে ২০টি প্রতিশ্রুতি থাকে, কিন্তু সবাই সবকিছুর সঙ্গে একমত হয় নাÑ তবু সামগ্রিক বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়। গণভোটও তেমনই একটি বিষয়।’
গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ইসির প্রথম নির্বাচনি প্রশিক্ষণ : এটি গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। সকাল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি পরিচালনা করছে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই), সহযোগিতায় রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।
আরএফইডির সভাপতি কাজী জেবেল জানান, চারদিনের এই প্রশিক্ষণে ২২০ জন সাংবাদিক অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য সংবাদকর্মীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া, আইন, বিধিমালা ও নীতিমালা সম্পর্কে ধারণা বাড়ানো এবং দায়িত্বশীল নির্বাচন কাভারেজ নিশ্চিত করা।’ প্রশিক্ষণ চলবে আগামী ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

