জুলাই-আগস্ট ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহিদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ রোববার। এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের উদ্দেশে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের(সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে মরদেহ উত্তোলন করা হবে।
সিআইডির পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. জসিম উদ্দীন খান জানিয়েছেন, জুলাই আন্দোলনে শহিদদের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) নমুনা সংগ্রহে রায়েরবাজার কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য আদালত থেকে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া। আজ রোববার থেকে ওইসব মরদেহ পর্যায়ক্রমে উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহেরকাজ শুরু করবে সিআইডি। এ বিষয়ে সকালে রায়ের বাজার শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
সিআইডি জানিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লুইস ফন্ডেব্রিডার এবং সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই কাজ শুরু হবে। এর আগেও কয়েকদফা মরদেহ উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। নানা কারণে সে উদ্যোগ পিছিয়ে যায়। গত ২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অজ্ঞাত শহিদদের কবর পরিদর্শন করেন সিআইডির কর্মকর্তারা। সবশেষ আজ মরদেহ উত্তোলন ও নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
প্রসঙ্গত, পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের রায়েরবাজার কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম। আবেদনে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ জীবন দেন। শহিদ হওয়া অনেককে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। এসব মরদেহ উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করা প্রয়োজন। যেহেতু এ-সংক্রান্তে হত্যা মামলা রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই মরদেহ উদ্ধার ও নমুনা সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্ত করা প্রয়োজন।
সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে অজ্ঞাত শহিদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই মরদেহ উত্তোলন করার পর প্রক্রিয়াগত সব কাজ করা হবে। এই অস্থায়ী তাঁবুতে ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর আবার মরদেহ যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে। যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হবে তার বিপরীতে স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। এরপর প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন