বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০১:৩৮ এএম

সম্পাদকীয়

জুলাই ঘোষণাপত্র: ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের বিজয় ও নতুন অভিযাত্রা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০১:৩৮ এএম

জুলাই ঘোষণাপত্র: ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের বিজয় ও নতুন অভিযাত্রা

বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটি নতুন মাইলফলক। দীর্ঘ ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন, একদলীয় আধিপত্য, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, দুর্নীতি ও দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে যে অদম্য সংগ্রাম দেশের ছাত্র-জনতা চালিয়ে এসেছে, তারই চূড়ান্ত পরিণতিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। জনগণের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত আকাক্সক্ষা বাস্তব রূপ পায় ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্রে, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা, পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তপশিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকার পাশাপাশি নানাবিধ বিষয় স্থান পায় জুলাই ঘোষণাপত্রে।  
এই ঘোষণাপত্রটি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্মারক দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে সরকার এটি চূড়ান্ত করেছে। ঘোষণাপত্রের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠিত হয়েছে। এই ঘোষণাপত্রকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।


জুলাই ঘোষণাপত্র কেবল একটি রাজনৈতিক দলিল নয়; এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রপিপাসু মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের সাক্ষ্য। উপনিবেশবিরোধী সংগ্রাম থেকে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ বারবার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। কিন্তু ক্ষমতার লোভে আওয়ামী লীগ সরকার সেই মর্মবাণীকে পদদলিত করে দেশকে একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের অন্ধকারে নিমজ্জিত করে।
বিগত ষোলো বছরে শেখ হাসিনা সরকারের শাসন ছিল গণবিরোধী ও নিপীড়নমূলক। প্রহসনের নির্বাচন, ভিন্নমত দমন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ, ব্যাংক লুট, অর্থপাচার, পরিবেশ ধ্বংসÑ সবই ছিল ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার হাতিয়ার। এরই বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সারা দেশে এক জাগরণ সৃষ্টি করে, যা শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ হারায়, অসংখ্য আহত ও পঙ্গু হয়। আর আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে সামরিক বাহিনীর সমর্থন পেয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন চূড়ান্তভাবে ভেঙে পড়ে।


ঘোষণাপত্রে যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত হয়েছে, তা বাংলাদেশের নতুন অভিযাত্রার দিকনির্দেশনা দেয়। শহিদদের জাতীয় বীর ঘোষণা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার, সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনর্গঠন, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূরীকরণÑ সবই দেশের ভবিষ্যতের ভিত্তি। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ ও জলবায়ু সহিষ্ণু রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি নতুন প্রজন্মের আশা জাগায়।


ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্রে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত হয়েছে, শহিদদের জাতীয় বীর ঘোষণা এবং তাদের পরিবার ও আহতদের জন্য আইনি এবং সামাজিক সুরক্ষা, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি। বিদ্যমান সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং একদলীয় শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধের অঙ্গীকার। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা। পরিবেশ ও জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি। যা বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশার বহির্প্রকাশ। 
তাই জুলাই ঘোষণাপত্র কেবল অতীতের ব্যর্থতা ও দুঃশাসনের বিচার দাবি নয়, ভবিষ্যতের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপও বটে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!