ঢাকা বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিদেশে অর্থ পাচার, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অন্তরায়

রেজাউল করিম খোকন
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ০১:৪৬ এএম

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ২০০৯-২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে (প্রতি ডলারের দাম ১২০ টাকা) এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল, আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। গত কয়েক বছরে অর্থ পাচার বাংলাদেশে উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

টাকা পাচারের বিষয়টিকে অর্থনীতিতে ক্ষতিকর ‘টিউমার’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া যায়। বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থনীতি ও সম্পদের বড় অংশ এই ক্ষতিকর টিউমার চুষে নেয়। প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ৪ শতাংশের পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ও প্রবাস আয় থেকে যত অর্থ এসেছে, এর এক-পঞ্চমাংশ পরিমাণ অর্থ এক বছরে পাচার হয়। বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ হিসেবে যত অর্থ আসে, এর দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে।  ব্যাংক খাত, শেয়ারবাজার, প্রকল্পের লুটপাট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজি, ঘুষের টাকা সংশ্লিষ্টরা বিদেশে পাচার করেছে নানা কৌশলে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।

দেশ থেকে কারা, কীভাবে, কোথায় টাকা পাচার হয়েছে- সেই চিত্র  জানার পর সত্যিই অবাক হতে হয়।  টাকা পাচারের জন্য দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের আমলাদের মধ্যে একধরনের অনৈতিক চক্র গড়ে উঠেছিল। ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি, এসব কর্মকা-ের অর্থ পাচার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।

অর্থ পাচার নিয়ে গবেষণা করে, এমন কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের ৫৩২টি বাড়ি বা সম্পদ আছে, যার মূল্য সাড়ে ৩৭ কোটি ডলার। ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে মনোনীত হয়েছেন। ২০২৩ সালে ইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৮১৫ কোটি ডলার পাচার হয়। বিদেশে টাকা পাচারের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার হিসাবে বেশ কিছু কারণের কথা বলা যায়। কারণগুলো হলো, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা; প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি; আইনি দায়মুক্তি এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি।

স্বৈরাচারের পতনের পর প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শত শত কোটি ডলারের চুরি করা সম্পদ করস্বর্গ ও ধনী দেশে পাচার ঠেকাতে কঠোর আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো তৈরি করা জরুরি। তিনি বলেছেন, অধিকাংশ সময় আমরা জানি এই চুরি করা অর্থ কোথা থেকে আসছে। তবুও এটিকে আমরা বৈধ অর্থ স্থানান্তর হিসেবে মেনে নিই, কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নেই।

বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে দক্ষিণের দেশগুলো থেকে চুরি করা সম্পদ পাচার ঠেকাতে। এ অর্থ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে করস্বর্গ ও উন্নত দেশে, যেখানে বিভিন্ন সুবিধাভোগী গোষ্ঠী এগুলোর বৈধতা দেয়। স্বৈরাচারের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, বলেন তিনি। অধ্যাপক ইউনূস আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক নিয়ম-কানুনের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, এগুলো ‘লুট করা অর্থ অফশোর দ্বীপপুঞ্জ ও ধনী দেশগুলোতে জমা রাখা সহজ করে দেয়।

আমাদের আরও কঠোর আন্তর্জাতিক নিয়ম ও এর কার্যকর প্রয়োগ দরকার। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জেনেশুনে অবৈধ অর্থ জমা রাখছে। ট্রান্সপারেনসি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য শাখার যৌথ প্রচেষ্টায় শেখ হাসিনার সহযোগীদের অর্জিত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও দেশ থেকে দুর্নীতি পুরোপুরি বিলীন হয়নি। স্বৈরশাসনের শেষের বছরগুলোতে দুর্নীতি ব্যাপকভাবে বেড়েছিল।

দুঃখজনক হলেও সত্য, গত বছরের আগস্টে শাসনক্ষমতার পরিবর্তনের পরও বাংলাদেশে দুর্নীতি পুরোপুরি শেষ হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বছরে প্রায় ১৬ বিলিয়ন (১ হাজার ৬০০ কোটি) ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। পাচার হওয়া অর্থ কোথায় আছে, তা জানা জরুরি। নাগরিক সমাজকে জানতে হবে, অর্থ কোথায় আছে এবং নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোকে আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হতে হবে; যাতে সেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা যায়।

সম্প্রতি লন্ডনে ১৮৫ মিলিয়ন (১৮ কোটি ৫০ লাখ) পাউন্ড মূল্যের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে টিআই বাংলাদেশ, টিআই যুক্তরাজ্য ও স্পটলাইট অন করাপশন (যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বাধীন দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা)-এর যৌথ উদ্যোগে। এখানে নাগরিক সমাজ তার ভূমিকা রেখেছে এবং ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষও ব্যবস্থা নিয়েছে। যেসব দুর্নীতির মামলায় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত, সেসব যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে যেতে হবে এবং একটি চূড়ান্ত পরিণতি দিতে হবে। টাকা দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ করতে হবে। সেটি বন্ধ করার যে হাতিয়ার রয়েছে সেগুলো আরও শাণিত করতে হবে। এ সংক্রান্ত আইনগুলো আরও জোরালোভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। পাচার করা অর্থ দিয়ে সাইফুজ্জামান দুবাইয়ে ২২৬টি ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন, ব্যবসায় বিনিয়োগ ও পরিচালনা করছেন। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। শিল্পপ্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের সভাপতি তিনি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৬-২০২৩ সাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বার্শা সাউথ, থানিয়া, গালফ কমার্শিয়াল, খাইরান, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলী, ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড, জাবিল দ্বিতীয়, মার্শা দুবাই, মিআইসেম, নাদ আল সেবা ফার্স্ট, ওয়াতি আল সাফা-৩ সহ বিভিন্ন স্থানে ২২৬টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে দুবাইয়ের আল বার্শা সাউথ-৩, কিউ গার্ডেনস বৌটিক রেসিডেন্স ব্লক ‘বি’ নামে দুটি সম্পত্তি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকের দুটি হিসাবসহ মোট চারটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে।

এসব ব্যাংক হিসাবে বিভিন্ন অঙ্কের দিরহাম ও মার্কিন ডলারের লেনদেন-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামান এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট  অজ্ঞাত ব্যক্তিদের পারস্পরিক যোগসাজশে দুবাইয়ের রাস আল খাইমাহ ইকোনমিক জোনের অনুমতিক্রমে বিল্ডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যাটেরিয়াল প্রোডাক্ট ব্যবসার জন্য জেবা ট্রেডিং এফজেডই এবং কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসার জন্য র‌্যাপিড র‌্যাপটর এফজেডই নামে দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, বিনিয়োগ এবং পরিচালনার তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, বিদেশে কোম্পানি নিবন্ধন, বিনিয়োগ ও সম্পত্তি অর্জনের জন্য সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুকূলে সরকার থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এভাবে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিদেশে সম্পত্তি ক্রয়, কোম্পানি নিবন্ধন এবং ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা করার মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাচার করেছেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে বিভিন্ন দেশে গড়ে তোলা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নয়টি দেশে ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলো টাকার বিনিময়ে অর্জন করেছে কিছু বাংলাদেশি। দেশগুলো হচ্ছে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মাল্টা, সেন্ট লুসিয়া ও তুরস্ক। দেশে বসেই বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষে সিআইসির গোয়েন্দারা দেশগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে নিয়ে আসেন। আরও অনুসন্ধান চলমান আছে ।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ পাচার করে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। এটি তাদের অনুসন্ধানের আংশিক চিত্র। এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বাংলাদেশের অনুকূলে নিয়ে আসার জন্য এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সাজা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সিআইসি। ছয়টির অধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। এখন পর্যন্ত আমরা যা পাওয়া গেছে এটি ‘টিপ অব দ্য আইসবার্গ’ (হিমশৈলের চূড়া মাত্র)।  তাদের  কাছে এখনো প্রচুর তথ্য রয়েছে, যা উন্মোচনে আরও সময় প্রয়োজন। এই অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের লোক বসিয়ে বহু তথ্য গায়েব করে দিয়েছেন। পতিত স্বৈরাচারী আমলে মুছে দেওয়া ওই সব তথ্য উদ্ধারে দক্ষতা অর্জন করেছে সিআইসি।

অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে দুদক, সিআইসি ও পুলিশের সিআইডিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে সম্পত্তি তৈরি করতে না পারে। সিআইসিকে অনুসন্ধান কাজ চলমান রাখতে  হবে। যত দূর সম্ভব গভীরে যেতে হবে এবং সম্ভাব্য আরও দেশে অনুসন্ধান বিস্তৃত করতে হবে। যাতে দেশের সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপে সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করবে, আশা করি। দেশের অর্থনৈতিক খাতের এই লুটপাটকে ভয়াবহ দেশদ্রোহ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ বিনির্মাণ করতে হলে অবশ্যই এই লুটেরাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের সম্পদকে কীভাবে লুটপাট করেছে কিছু মানুষ, তা জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। সে জন্য সবগুলো সংস্থাকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

রেজাউল করিম খোকন: অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক