হঠাৎ করেই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কুমার শানু ও কবিতা কৃষ্ণমূর্তির গাওয়া নব্বই দশকের বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘আগুনের দিন শেষ হবে একদিন’। গানটি আলোচনায় এসেছে অন্যভাবে অবিকল কলকাতার অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জির মতো দেখতে এক গায়িকার কণ্ঠে। নেটিজেনদের মনে তাই জন্ম নিয়েছে নানান প্রশ্ন এই গায়িকার। সেই প্রশ্নের উত্তর জানাতে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন গায়িকা পূর্ণিমা ভদ্র। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আরফান হোসাইন রাফি
গানের জগতে কীভাবে আসা?
প্রাথমিকে ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই গান করতাম। টেলিভিশনে যখনই কোনো গান বাজত তা মনোযোগ দিয়ে শুনতাম আর অবচেতনভাবেই গুনগুন করে গাইতাম। সেটা মা-বাবারও ভালো লাগত। তাই তারা ভেবেছিলেন আমাকে গান শেখানো উচিত। সেখান থেকেই আমার গানের পথচলা শুরু। তখন আমার বয়স মাত্র পাঁচ-ছয় বছর।
নেপথ্যের গল্প
২০২৩ সালে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান শেষে বের হওয়ার সময়, অডিশনে টিকে যাওয়ার পর আমাকে একটি সাক্ষাৎকার দিতে হয়েছিল। সেই সাক্ষাৎকারেই গানটির কয়েকটি অন্তরা গেয়েছিলাম। তখনই গানটি অনেকটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে নানা চাপের কারণে তখন গান নিয়ে আর এগোনো হয়নি। ধীরে ধীরে গান থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে একই টেলিভিশন চ্যানেল গানটির ক্লিপ আবার প্রকাশ করে। এবার সেটি আগের চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পায়, বলতে গেলে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই শ্রোতাদের কাছ থেকে দারুণ ভালোবাসা পাচ্ছি। এটা আমার জন্য এক আনন্দময় মুহূর্ত। তবে এর মাঝেই আমার গানের শিক্ষককে ভীষণ মনে পড়ছে। তিনি আজ আর বেঁচে নেই। যদি থাকতেন, নিশ্চয়ই গানগুলোর ক্লিপ দেখে তিনি খুব খুশি হতেন।
কেন গান থেকে দূরে?
গান থেকে পুরোপুরি সরে যাইনি। মাঝে ছায়ানটে ভর্তি হয়েছিলাম, গান চর্চা চালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু পড়াশোনার চাপসহ নানান ব্যস্ততায় নিয়মিত অনুশীলন করা সম্ভব হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে গানের প্রতি মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে উঠেছিল। এ জন্য শেষ পর্যন্ত ছায়ানটে ভর্তিটাও বাতিল করতে হয়।
এখন নতুন কিছু ভাবছেন?
দর্শকরা আমাকে যে পরিমাণ ভালোবাসা দিচ্ছেন গানটির জন্য, সেই ভালোবাসার দায়বদ্ধতা থেকেই আমি গান নিয়ে নতুন করে এগোতে চাই। এখন থেকে আমার নিজের ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত গান প্রকাশ করতে চাই। পাশাপাশি কোনো কাজের সুযোগ এলে সেটিও করতে আগ্রহী। শ্রোতারা যে ভালোবাসা দিচ্ছেন, আমি সেই ভালোবাসা ধরে রাখতে চাই।
আপনার বেড়ে ওঠা কোথায়?
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাঙ্গাইলের মধুপুরে। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছি। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
অনেকেই রচনা ব্যানার্জির সঙ্গে আপনার চেহারার মিল বলছেন
আসলে ছোটবেলায় আমার এক শিক্ষক সবসময় বলতেন, আমার হাসিটা নাকি ভারতীয় অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জির মতো। তখন আমার কাছে মনে হতো, হয়তো শুধু তার কাছেই এমন লাগছে। কিন্তু এতদিন পর এত মানুষ যখন একই কথা বলছে, এখন মনে হচ্ছে আমার শিক্ষক ঠিকই বলেছিলেন; তিনি সঠিক ছিলেন। হয়তো আমার চেহারার সঙ্গে সত্যিই কিছুটা মিল আছে। তবে বিষয়টিকে আমি বেশ উপভোগ করছি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন