ঢাকা বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পপির উপলব্ধি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫, ০১:০২ এএম

গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘কুলি’ সিনেমাতে চিত্রনায়ক ওমর সানীর বিপরীতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে ঢাকাই সিনেমায় মৌসুমী-শাবনূরের পর আরও এক নায়িকার অভিষেক হয়। অভিষেক সিনেমাতেই তিনি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।

এই সিনেমার ‘আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে’ গানটি সেই সময় দেশের আনাচে-কানাচে পৌঁছে গিয়েছিল। সিনেমাতে পপির অনবদ্য অভিনয় এবং গ্ল্যামারাস উপস্থিতি প্রথম সিনেমাতেই নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। যে কারণে এর পরের পথচলাটা যেন পপির জন্য কিছুটা হলেও সহজ হয়ে যায়।

এরপর পপিকে একে একে দেখা যায় ‘দরদী সন্তান’, ‘চারিদিকে শত্রু’, ‘অন্যায় আবদার’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘জোর’, ‘মনের মিলন’, ‘মানুষ মানুষের জন্য’, ‘প্রাণের প্রিয়তমা’, ‘পাহারাদার’, ‘অবুঝ মনের ভালোবাসা’, ‘কারাগার’, ‘লাল বাদশা’, ‘দুজন দুজনার’, ‘মা যখন বিচারক’, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ‘মা যখন বিচারক’, ‘অনেক দিনের আশা’, ‘ভালোবাসার ঘর’, ‘জীবন মানেই যুদ্ধ’, ‘আমার ঘর আমার বেহেস্ত’, ‘বিদ্রোহী সন্তান’, ‘নারীরাও প্রতিবাদী’, ‘রানী কুঠির বাকি ইতিহাস’, ‘অন্ধকারে চিতা’, ‘শ্রেষ্ঠ সন্তান’, ‘জগত সংসার’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘কী যাদু করিলা’, ‘বস্তির রানী সুরিয়া’ ইত্যাদি চলচ্চিত্রে।

পপি ২০০৩ সালে কালাম কায়সার পরিচালিত ‘কারাগার’ সিনেমায় প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে নারগিস আক্তারের ‘মেঘের কোলে রোদ’ এবং সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ‘গঙ্গাযাত্রা’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।

পপি সর্বশেষ অভিনয় করেন ‘ডাইরেক্ট অ্যাটাক’ নামের একটি সিনেমায়। সাদেক সিদ্দিকী পরিচালিত অনেক আগেই সিনেমাটির কাজ শেষ হলেও এখনো মুক্তি পায়নি।

জানা যায়, পপি অভিনীত ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ সিনেমাটির কাজ আবারও শুরু হবে। তবে পপি আর অভিনয়ে ফিরবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবুও নির্মাতা আরিফুর জামান আরিফ নায়িকার পথ চেয়ে।

এদিকে, পপি তার স্বামী আদনান ও একমাত্র সন্তান আয়াতকে নিয়ে বেশ সুখে আছেন। আপাতত স্বামী, সন্তান সংসার নিয়েই ব্যস্ত, ভালো আছেন বলেও জানান তিনি।

পপি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই- আমার জীবন থেকে নেওয়া এই উপলব্ধি। পরিবারের জন্য সবাই দায়িত্ব পালন করবেন, কিন্তু নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত না করে, নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে পরিবারের জন্য পুরো নিবেদিত হয়ে কিছু করবেন না। কারণ পরবর্তীতে যেন কেউ আঙ্গুল তুলে কথা না বলতে পারে। যেহেতু সমাজে, চলচ্চিত্রে আমার একটি অবস্থান আছে। তাই আমার ভক্ত, দর্শকদের আগামী দিনের ভালোর জন্যই কথাগুলো বললাম। কারণ একজন মানুষের দেওয়া উপদেশ বা নির্দেশনায় মানুষের জীবন বদলে যায়। একটা সময় আমি মনে করতাম পরিবারের সবাই আমার।

পরে সবাই যার যার মতো প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবার পর দেখলাম কেউই আর আমার না। আমাকে কঠিন আঘাত দিয়ে, সমাজের কাছে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে আমাকে শূন্য করে দিয়ে গেছে আমার মা-বোনেরা। আমি আমার ইন্ডাস্ট্রির মানুষকে সেই সময়টাতে পাশে পেয়েছি। নায়িকা পপিকে নয়, ব্যক্তি পপিকে উপলব্ধি করে তারা পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ আমার চলচ্চিত্র পরিবারের কাছে। আর আমার স্বামী আদনান প্রসঙ্গে বলব, ও আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আমাকে আগলে রেখেছে, আমাকে সাহস দিয়েছে, আমাকে সাপোর্ট করেছে। শেষ কথা শুধু এটুকুই বলব, কেউ কেউ আমার মায়ের কথা শুনে বিভ্রান্তিতে পড়ে নিজেদের চ্যানেলের টিআরপি বাড়ানোর জন্য মিথ্যে সংবাদ প্রচার করেছেন বা করছেন-এটা উচিত নয়। সত্য প্রকাশে আপসহীন থাকতে হয়।’