বাংলা গানের কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমীন। গত ৫ দশকের বেশি সময় ধরে আধুনিক গান, বিশেষ করে সিনেমার গানে তার কণ্ঠ উপহার দিয়েছেন এ দেশের মানুষকে। তার গাওয়া গান বেজেছে মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে। দীর্ঘদিন পর তিনি নতুন গান নিয়ে হাজির হচ্ছেন শ্রোতাদের সামনে। ‘অতীত গল্প গুলি’ শিরোনামের এই গানটি শিগগিরই প্রকাশ পাবে। সম্প্রতি গানটির রেকর্ডিং শেষ হয়েছে।
গানটির কথা লিখেছেন গীতিকার ফারুক আনোয়ার এবং সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন সম্রাট আহমেদ। খুব শিগগিরই এফ. এ. মিউজিকের ব্যানারে গানটি মুক্তি পাবে বলে জানা গেছে।
নতুন গান নিয়ে সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, ‘বহুদিন পর এমন একটি গান যা আমার মন ছুঁয়ে গেল। এটি গাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাকে অন্য রকম আনন্দ দিয়েছে। গীতিকারকে ধন্যবাদ এত চমৎকার একটি গানের সঙ্গী করার জন্য। আশা করি, দর্শকরা গানটি পছন্দ করবেন।’
গীতিকার ফারুক আনোয়ার বলেন, ‘গানটি আমি শ্রদ্ধেয়া সাবিনা ইয়াসমীনকে নিয়েই লিখেছি। তাই বিভিন্ন প্রেক্ষাপট গানটিতে সংযোগ করতে হয়েছে। গানের কথাগুলো সাবিনা ইয়াসমীনের মত সংগীত ব্যক্তিত্বের কাছে ভালো লাগাতে আমি ধন্য।’
এদিকে, বাংলাদেশে শিল্পীদের কদর কোনোদিন ছিল না, এখনো নেই বলে মন্তব্য করেছেন সাবিনা ইয়াসমীন। সম্প্রতি গানের রেকর্ডিং শেষে তিনি বলেন, ‘যারা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন তারা যদি গানবাজনার কিছু না বোঝেন, মূল্য না দেন তাহলে তো আমাদের (শিল্পী) করার কিছু নেই। জোর করে কিছু হবে না।’
দেশের জনপ্রিয় এই গায়িকা আরও বলেন, ‘লতা মঙ্গেশকরের পা ধরে প্রণাম করেন মোদি (নরেন্দ্র মোদি), কিন্তু এদেশ শিল্পীর কদর করে না। তারা সম্মান জানিয়ে গানকে কোথায় নিয়ে গেছেন বলে বোঝাতে পারব না। কিন্তু আমাদের দেশে সরকারিভাবে সেটা কখনো পেয়েছি? কত বড় বড় শিল্পী ছিলেন আমাদের মাঝে। বিশেষ করে পুরুষ শিল্পীদের তো কেউ নেই।’
সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, ‘আমাদের এন্ড্রু কিশোর, সুবীর নন্দীর মতো এত ভালো শিল্পী ছিল, তাদের কিছু কিছু গান তো আর্কাইভ করে রাখা যেত। এগুলোর কথা তো কেউ চিন্তা করে না। সবশেষ ফরিদা পারভীন নিভৃতে চলে গেলেন, তার মতো শিল্পী কি আর আসবে? এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’
চলচ্চিত্রের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান এই কিংবদন্তি শিল্পী। ব্যক্তিগত আক্ষেপ না থাকলেও শিল্পীদের গানের রয়্যালিটি প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, ‘অন্যান্য দেশে থাকলেও আমাদের এখানে গানের রয়্যালিটির সু-ব্যবস্থা নেই। সরকার এদিকে সুদৃষ্টি না দিলে ঠিক হবে না। আবদুল আলীম, রহমান বয়াতি থেকে বহু শিল্পীর পরিবার রয়্যালিটি পেলে অনেক ভালো থাকতেন। যদি এই সিস্টেমটা ঠিক হতো তাহলে শিল্পীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারতো।’