ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর, ২০২৫

সিন্ডিকেটে ভরা ওটিটি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ১২:৪৮ এএম

নাট্যাঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ আ খ ম হাসান। টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে দর্শকদের মুগ্ধ করে আসছেন তিনি। কমেডি থেকে গম্ভীর, সব ধরনের চরিত্রেই সমান দক্ষ এই অভিনেতা। সমসাময়িক নাটক, ওটিটি; ভিউনির্ভর সাফল্য, সবকিছু নিয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি

ব্যস্ততা কি নিয়ে?

বেশকিছু ধারাবাহিক এবং একক নাটক ঘিরে ব্যস্ততা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে।

‘রাখাল’ চরিত্র

এই চরিত্রের মাধ্যমে আমি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছি কিন্তু, এটা অনুসরণ করে চলি না। কোন চরিত্রকে অনুসরণ করলে ওই চরিত্রেই আটকে থাকতাম। ‘রাখাল’ চরিত্র দিয়ে আমার পরিচিতি হয়েছে এটা সত্যি। তবে একজন অভিনেতার কাজ হলো নতুন নতুন চরিত্রে নিজেকে খুঁজে পাওয়া, ভিন্ন ভিন্ন রূপে দর্শকের সামনে হাজির হওয়া। তাই সবসময় চেষ্টা করি প্রতিটি চরিত্রে নতুন কিছু দেওয়ার, যেন দর্শক আমাকে শুধু ‘রাখাল’র ভেতরেই সীমাবদ্ধ না দেখে।

আপনার অভিনয়ের শক্তি কোথায়?

অভিনয় যেহেতু আমার নেশা এবং পেশা, সবকিছুর সঙ্গে জড়িত; ওই কারণে শক্তি কাজ করে, অভিনয় করতে হবে। ভালো করতে হবে।

গম্ভীর নাকি কমেডি, কোনটাতে স্বচ্ছন্দ লাগে?

সব ধরনের নাটকে আমি স্বচ্ছন্দবোধ করি। যখন যে চরিত্রে কাজ করার প্রস্তাব পাই তখন সেই চরিত্রে ভালোভাবে অভিনয় করার চেষ্টা করি।

ভিউ বাড়লেই নাটক সফল বলা হয়

গল্পের মান অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু এখন ভিউয়ের উপরই সবকিছু নির্ভর করে। কোনো শিল্পীর পারিশ্রমিক কত, কে ব্যস্ত বেশি; সেটা এখন ভিউয়ের উপর নির্ভর করে। গল্পের মান পরে, এমন অবস্থা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে।

ভিউয়ের চাপে মান হারাচ্ছে?

ভিউয়ের কারণে নির্মাতারা মান হারাচ্ছে এটা বলা চলে এক অর্থে। কারণ ভিউ ধরার জন্য তারা যেটা হয়তো ভাবতেছে, যেটা করলে ভিউ হবে না, সেটা করতে পারছে না। যেটা করলে ভিউ হবে, সেটা ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও করতে হচ্ছে।

শিল্পীদের রাজনীতি

রাজনৈতিক সচেতন থাকা ভালো। অবশ্যই থাকা উচিত। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা ঠিক না। কারণ, সব দলের, সব মতের মানুষই আমাদের নাটক দেখে এবং ভালোবাসে। একটা দলে আবদ্ধ হওয়াটা ঠিক না।

ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে?

কাজ করতে চাই। তবে কবে দেখা যাবে তা এখনই বলতে পারছি না। ওটিটির মধ্যে অনেক গ্রুপিং আছে। ওটিটিতে সিন্ডিকেটে ভরা। সিন্ডিকেটের সবাই নিয়মিত কাজ করছেন। এর বাইরে কিন্তু শিল্পীদের নিচ্ছে না। অভিনেতা-অভিনেত্রীর অভিনয় গুণের চেয়ে তার রাজনীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। আমি ওটিটির মধ্যে কোনোভাবেই যুক্ত হয়নি। কিন্তু যতটুকু শুনি, যারা কাজ করে তাদের কথাবার্তার মাধ্যমেই বুঝতে পারছি এসব বিষয়। ওটিটিতে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছি অনেক, কিন্তু চরিত্র পছন্দ হয়নি। একবার একটা কাজের মিটিংও হয়েছিল কিন্তু রাজনীতির কারণে হয়নি।

ওটিটি এখন টেলিভিশন নাটকের জন্য হুমকি নাকি সম্ভাবনা?

কোনোটাই কোনোটার জন্য হুমকি নয়। সবগুলোই অনলাইন বেজ। বর্তমানে টেলিভিশনের সকল নাটক ইউটিউবে প্রকাশ পায়। ইউটিউবও অনলাইন, ওটিটিও অনলাইন। ইউটিউব হলো সার্বজনীন, ওটিটি হলো প্ল্যাটফর্ম, সবই তো অনলাইন। ওটিটির কাজ ইউটিউবে ওইভাবে দেয় না। তাই হুমকি হওয়ার কোনো কারণই নেই। যার ইচ্ছে হবে সে ওটিটিতে গিয়ে দেখবে আর টেলিভিশন নাটক বা ইউটিউব নাটক এইগুলো ফ্রি, যখন যা ইচ্ছা দেখতে পারবে।

গল্পের মান নাকি তারকাখ্যাতি

তারকাখ্যাতি। কারণ, তারকা দেখেই মানুষ নাটক দেখার প্রথম সিদ্ধান্ত নেয়। যার কারণে অভিনেতা-অভিনেত্রীকে প্রাধান্য দেওয়া হয় ভিউয়ের জন্য। 

অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আসা নাটকগুলো টিভি নাটককে পিছিয়ে দিচ্ছে?

টিভি এবং ইউটিউব নাটক একই জিনিস। প্রত্যেকটি টেলিভিশনের নাটকগুলো প্রচার হওয়ার পর ইউটিউবে যাচ্ছে। তবে যারা শুধু ইউটিউব ভিত্তিক নাটক নির্মাণ করছে তারা টেলিভিশন পর্যন্ত যেতে পারে না। সবাই চায় টেলিভিশনে ব্যবসা করার পর ইউটিউবেও ব্যবসা করতে। কেউ যেতে পারে আবার কেউ পারে না। যারা ইউটিউব ভিত্তিক নাটক নির্মাণ করে তারা তো নতুন, তাই টেলিভিশন চায় না তাদের নিয়ে কোনো কাজ করতে।

অ্যাওয়ার্ড

আমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য কাজ করি না। কোনো অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যাইও না। যেতে ইচ্ছে করে না। প্রতি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয় কিন্তু আমি যাই না। এখন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে এমনও দেখা যায় যে, তাদের কেউ চিনে না এবং উল্লেখ করার মতো কাজ নেই। তারাই অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে। তাদের কেউ চিনে না বলেই অনুষ্ঠানে যায় নিজেকে চেনাতে। আমাদের তো সকলে চেনে এজন্যই যাই না। আর অশ্লীল পোশাক পড়ে এ ধরনের অনুষ্ঠানে যাওয়া একেবারেই উচিত নয়। আমাদের সমাজে যে ধরনের পোশাক অনুমোদিত নয়, ওই ধরনের পোশাক অনুষ্ঠানে পড়ে গেলে তো দৃষ্টিকটু মনে হবে, এগুলো উচিত না।