আষাঢ়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় লালমনিরহাটের কৃষকেরা পড়েছিলেন তীব্র খরায়। ফলে রোপা-আমন ধান চাষে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। তবে শ্রাবণের প্রথম দিনের বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে কৃষকের মাঝে। ফসলি মাঠে জমেছে পানি, বাড়ছে চাষাবাদের ব্যস্ততা।
লমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির অভাবে কিছু কৃষকেরা সেচের পানি দিয়ে চাষাবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করছে। বৃষ্টির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছে না, মাঠেই পড়ে আছে। আবার পচে যাচ্ছে খেতেই। এরপর শ্রাবণের প্রথম দিনের বৃষ্টিতে খুশিতে ভরে উঠেছে কৃষকদের প্রাণ। সেচের জন্য তাদের অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে বাধ্য থাকতে হতো, যা এই বৃষ্টিতে সাশ্রয় হলো। বৃষ্টি পেয়ে অনেক কৃষকই মনের আনন্দে বৃষ্টিতে ভিজে রোপা-আমন রোপণের জন্য জমি চাষ শুরু করেছেন।
গতকাল বুধবার শ্রবণের প্রথমদিন থেমে থেমে সারাদিন বৃষ্টি পড়েছে। বর্ষার আগমনে পথঘাট ও ফসলের মাঠগুলো যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। স্বস্তি নেমে এসেছে প্রকৃতি আর মানুষের মাঝেও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফসলের মাঠে বৃষ্টির পানি জমেছে। তাই কৃষকরা বৃষ্টিনির্ভর আমন ধানের চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে পাটখেত থেকে নিয়ে পচানোর জন্য পানিতে জাগ দিচ্ছে। অনেক কৃষক ধানের চারা রোপণের জন্য জমি চাষাবাদের উপযোগী করে তুলছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, লালমনিরহাটে চলতি মৌসুমে ৫৩ হাজার ৫০৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৭৩ টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেক কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে ধানবীজ ও সার।
কালীগঞ্জের কাকিনা গ্রামের কৃষক মনসুর আলী জানায়, পানির জন্য সমস্যায় ছিলাম। পাট জাগ দিতে পারি নাই পানির অভাবে। ফসলি জমি শুকিয়ে গিয়ে ছিল। আজকের বৃষ্টিতে জমিতে চাষাবাদের আশা ফিরে পেয়েছি। মাঠে ধান চাষের জন্য কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে বলেও জানান তিনি।
তুষভান্ডার ইউনিয়নের হরবানীনগর গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন জানায়, কিছুদিন পানি না থাকায় সমস্যায় ছিলাম। এরপর সেচের ব্যবস্থা করছি। এরপর শ্রাবণের প্রথম দিনের বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে পানি জমে আছে। এখন আর সেচ ব্যবহার করতে হবে না।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন বলেন, শ্রাবণের প্রথম দিন ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি পেয়ে কৃষকরা আমন রোপণের জমি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিছুদিন বৃষ্টি না থাকায় কৃষকদের সেচের পানির জন্য কিছুটা বাড়তি খরচ হয়েছে। দুদিন আগেই কৃষকরা সেচের মাধ্যমে জমি চাষ করে তৈরি করে রেখেছেন। আমরা মাঠপর্যায়ে সকল কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি যাতে কৃষকেরা সমস্যায় না পড়েন।
আপনার মতামত লিখুন :