নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে সরকারি পাঠ্যবই গোপনে বিক্রিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলেজ ক্যাম্পাসে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই পিকআপ ভ্যানে লোড করে বিক্রির সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন অধ্যক্ষ, পিকআপচালক ও বই ক্রেতা। পরে খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক নূরে আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বইগুলো পুনরায় স্টোররুমে রাখার নির্দেশ দেন।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েও শিক্ষা কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের বিনিময়ে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেন এবং কোনো ধরনের আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ।
জানা গেছে, অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ, কাজ না করিয়ে বিল উত্তোলন, অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং শিক্ষক বরখাস্তসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে ১৬ কোটি টাকার অনিয়ম প্রমাণিত হলে তাকে অপসারণ করা হয়। এরপর দায়িত্ব নিয়ে সুরাইয়া পারভীনও একই অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘বই নেই’ বলে পাঠ্যবই দেওয়া হয়নি। অথচ সেই বই-ই কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। তারা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ব্যবস্থা না নিলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করবেন।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক। একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক নূরে আলম জানান, ‘নতুন ও পুরাতন মিলিয়ে প্রায় এক লাখ টাকার বই জব্দ করা হয়েছে। অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ জড়িত থাকলে আইনের আওতায় আনা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :