রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:৩৩ এএম

জামায়াত-এনসিপি-চরমোনাই মিলে নির্বাচনি জোট হচ্ছে!

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:৩৩ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নতুন জোট গঠন ও সমঝোতার মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মরিয়া।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ও চরমোনাইর পিরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো আলোচিত পিআর পদ্ধতি, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনসহ সর্বশেষ জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে ঘোষিত সাত দফা দাবিতে একমত।

এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আগামীর নির্বাচনে বিএনপির শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে জামায়াত-এনসিপি-চরমোনাইসহ ইসলামপন্থি দলগুলোর নির্বাচনি জোট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণার আগ পর্যন্ত কোনো বিষয়ই নিশ্চিত নয় বলেও জানান তারা।

এদিকে প্রায় ২৪ বছর পর বিএনপি ও জামায়াতের জোট ভেঙে গেছে। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে জনপ্রিয় দল দুটি এখন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুটি দলই খুঁজছে রাজনৈতিক মিত্র। বিএনপি তার যুগপৎ শরিক দলগুলোর সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে আলোচনা। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলেন, নির্বাচনের আগে হরহামেশাই দেখা যায় ছোট দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগি, কে নির্বাচন করবে বা কে করবে না এসব নিয়ে মতভেদের জেরে ছোট দলগুলো আরও ছোট হয়ে যায়। নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে এসব দলের কার্যত আর কোনো অস্তিত্ব দেখা যায় না। এভাবেই বাংলাদেশে নির্বাচন ঘিরে জোটের রাজনীতি চলে। ভোটের আগে এসব জোটের তৎপরতায় মাঝেমধ্যে যেন একধরনের জটও পরিলক্ষিত হয়! একই সঙ্গে বড় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের শক্তি বাড়াতে দলে টানতে চায় আলোচিত ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকে।

রাজনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতি, জামায়াতের জাতীয় সমাবেশের সাত দফা দাবিসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখ করে সংসদ নির্বাচন পেছানোর বিষয়েও একমত দেখা যাচ্ছে জামায়াত, এনসিপি, চরমোনাইসহ ইসলামপন্থি দলগুলোর মধ্যে।

তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হচ্ছে বিএনপির শক্ত প্রতিপক্ষ হতে নির্বাচনে জোট করতে যাচ্ছে তারা। তবে বিএনপির বিগত ১৬ বছরে যে লড়াই-সংগ্রাম ও ত্যাগ রয়েছে, তার বিষয়ে জনগণ অবগত। একই সঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলন ও দেশজুড়ে তাদের যে ভোটব্যাংক, সেখানে ইসলামি দলসহ নতুন জোট তাদের বিরুদ্ধে কতটুকু শক্তিশালী জোট গড়তে পারবে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। 

বিগত সরকারের আমলে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের কারণে দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এদিকে বিএনপি ইতিপূর্বে তিনবার সরকার গঠন করেছে। সুতরাং বিএনপির প্রতিপক্ষ হিসেবে নতুনভাবে বিরোধী শক্তি কতটা সুবিধা পাবে বা তাদের ভোটের পরিমাণ কেমন হবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। 

নির্বাচনি জোটের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি জোট করা নিয়ে বিএনপি শুরু থেকেই ইতিবাচক। যুগপৎ আন্দোলনে প্রথমে ৪২টি দল থাকলেও পরে আরও কিছু দল যুক্ত হয়ে প্রায় ৫২টির মতো হয়। জাতীয় নির্বাচনে জোট থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি আগামীতে জাতীয় সরকার গঠন করবে, সেই লক্ষ্য পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা হলেই আনুষ্ঠানিক জোট গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জনগণ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। বিগত ১৬-১৭ বছরের দুঃশাসন, দমন-পীড়ন ও অনিয়ম দেখে মানুষ আর সেই পথে ফিরতে চায় না। মানুষ এমন দেশ চায়, যেটি হবে ন্যায়ের ভিত্তিতে, যেখানে শাসক হবেন জনগণের সেবক।

রাজনৈতিক জোটের বিষয়ে তিনি বলেন, ইসলামি দলগুলো ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে আগামীতে প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার হতে হবে। ইসলামপন্থি দলসহ অনেক দলের সঙ্গেই আলোচনা হচ্ছে, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর চূড়ান্ত জোটের চিত্র স্পষ্ট হবে।

জনগণের কল্যাণে এবং একটি সুন্দর নির্বাচনের স্বার্থে সমমনা দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা হবে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, ইসলামপন্থি জোটের বিষয় আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। পরবর্তী পদক্ষেপ পরিকল্পনার জন্য নিয়মিত বৈঠক চলছে।

কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন এখনো রয়েছে। তবে আমরা আশা করছি নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

নির্বাচনি জোটের বিষয়ে এনসিপির শীর্ষ একাধিক নেতা জানান, নির্বাচনি জোট নিয়ে এখনো ভাবছেন না তারা। জোটের বিষয়ে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত থাকলেও সে বিষয়ে এখনই গুরুত্ব দিচ্ছেন না তারা। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বর্তমান পেক্ষাপটে নানা ইস্যুতে মতের মিল হলেও ভোটের মাঠে জোট বাঁধার সম্ভাবনা কতটা, তা এখনই স্পষ্ট করতে চাইছেন না তারা।

নির্বাচনি জোটের বিষয়ে নবগঠিত দল এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা বিপ্লবের শক্তি নিয়ে পথ চলে, যারা দেশের জন্য মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদের কেনার সাধ্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেই। রাজনৈতিক বা নির্বাচনি জোটের বিষয়ে এখনই ভাবছে না এনসিপি। তবে আগামী নির্বাচনের জন্য এনসিপি কোনো জোটে গেলেও নেতৃত্বে থাকবে।

তিনি বলেন, সংস্কার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সীমাহীন জুলুম ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ রাজপথে নেমেছিল, যার ফলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল। সেই দেশে সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। ভবিষ্যতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, বিচারে হাত দিতে পারবে না। 

অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলনের প্রধান চরমোনাই পির মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ইসলামের পক্ষের শক্তিগুলো একত্রিত হওয়ার সময় এসেছে, বিশাল ভোটব্যাংক একত্রিত করার প্রচেষ্টা চলছে। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে তা আমাদের জন্য অকল্যাণকর হবে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে জামায়াত এবং ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো জোট গঠনের চেষ্টার পাশাপাশি ‘নির্বাচনের পরিবেশ নেই’ এমন প্রচার জোরদার করছে। একই সঙ্গে দলগুলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠায় প্রশ্ন উঠছে।

এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা দেরি হলে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে দেশে গত কয়েক মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন থাকলে সংসদ নির্বাচনে কোনো সমস্যা হবে না।

Shera Lather
Link copied!