নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা, গাউছিয়া ও গোলাকান্দাইল এলাকায় মহাসড়ক দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় সড়কের দুপাশের শতাধিক অবৈধ দোকাপাটে উচ্ছেদ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল আলম, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলামসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
জানা যায়, ভুলতা, গাউছিয়া ও গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্যস্ততম এলাকা। এ সড়কের উভয় পাশে গাউছিয়া কাপড়ের মার্কেটসহ বড় বড় মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিল্প এলাকা হিসেবে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা রয়েছে এখানে। মহাসড়কটি উভয় পাশে দখল করে বিভিন্ন দোকানপাট বসিয়ে ব্যবসা করছেন ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। যার ফলে এই মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। আর যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীসাধারণ থেকে পথচারীরা।
বিশেষ করে দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহন ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকায় এসে বাধার মুখে পড়েন। কয়েক দিন পর পর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও ফের দখলে নেন ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। এটা আর করতে দেওয়া হবে না। ব্যস্ততম ঢাকা সিলেট মহাসড়ক দখল করে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনার কারণে নিত্যদিনের ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
অভিযান শেষে ইউএনও মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে দেশের অন্তত ১৮টি জেলার মানুষ যাতায়াত করে। এই রুট দিয়ে নির্বিচারে যাত্রী ও যানবাহন চলাচল করে আসছে। কিন্তু ভুলতা গাউছিয়া মোড়ে এসে সেই যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। কারণ এখানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সড়কের ওপর অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছেন।
আমরা এর আগে তিনবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু দখলদাররা আবারও বসে পড়েন। এর পেছনে নানা ধরনের স্টেকহোল্ডার, যেমনÑ ব্যবসায়ী, দোকান মালিক সমিতি, স্থানীয় এলিট শ্রেণি ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা জড়িত। এ কারণে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়। তবে এবার আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গতকাল থেকে সড়কের দুই পাশে স্বেচ্ছাসেবক (ভলান্টিয়ার) থাকবে এবং আগামী এক মাস প্রতিদিন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরেজমিনে দায়িত্ব পালন করবেন। কেউ আবার অবৈধভাবে বসার চেষ্টা করলে সরাসরি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জেল ও জরিমানা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এত দিন আমরা কাউকে জেল দিইনি, কারণ এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জীবিকা নির্বাহের জন্য বসে থাকেনÑ তাদের আর্থিক ক্ষতি করতে চাইনি। তবে এখন থেকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। আজ (গতকাল) মাইকিংয়ের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাল (আজ) থেকে কেউ নিয়ম ভাঙলে সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :