মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০৮:২২ এএম

২৩ বছর পর মিলল মুক্তি - নতুন জীবনে দুলাল পেল মুদি দোকান

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০৮:২২ এএম

২৩ বছর পর মিলল মুক্তি  - নতুন জীবনে দুলাল পেল মুদি দোকান

সংসার করার আশায় ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন দুলাল হোসেন (৫০)। কিন্তু বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় স্ত্রী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সেই হত্যা মামলায় ২৩ বছর সাজা ভোগ করে চলতি বছরের গত ২ জুলাই কারাগার থেকে মুক্তি পান। ওই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িত হয়েছিলেন তিনি।

দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকায় তার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে অনেক কিছু। তবে জেলের ভেতরেই গড়ে তোলেন আরেক পৃথিবী। কারাগারের শৃঙ্খলা মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করায় মুক্তির পর নিজ গ্রামে নতুন মুদি দোকান করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন ।

অবশেষে দুলালকে পুনর্বাসন করতে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়ালের উদ্যোগে একটি মুদি দোকান উপহার দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মূলধন হিসেবে নগদ টাকা ও বসবাসের জন্য একটি বাড়িও দেওয়া হবে তাকে। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক দুলালের নতুন মুদি দোকান উদ্বোধন করেন।দুলাল হোসেন নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বালুভরা ইউনিয়নের বারাতৈল গ্রামের মৃত ইয়াকুব হোসেনের ছেলে।

দুলাল হোসেন বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। পরে শ্বশুরের দেওয়া হত্যা মামলায় ২০০২ সালে জেল হয় তার। সেই মামলায় ২৫ বছর বয়সে যাবজ্জীবন জেল হয় তার। এরপর ১৪ বছর রাজশাহী জেলা কারাগারে বন্দিদের (সিআইডি) হিসাবের কাজ করেন। বন্দিরা গোপনে কী পরিকল্পনা করছে তা দেখাশোনা করতেন তিনি। পরে নওগাঁ জেলা কারাগারে আসেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, মামলা চলাকালে আদালতে তাকে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। উকিল খরচ ও মামলার অন্যান্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে পরিবারের শেষ সম্বল জমিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। খরচ চালাতে ব্যর্থ হয়ে একসময় বিচারের আশা ছেড়ে দেন স্বজনরা। একটা সময় জেলখানায় তাকে আর কেউ দেখতেও আসত না। মাঝে মাঝে মা আয়েশা বেগম কিছু টাকা দিয়ে এলেও তিনি তা খরচ করতেন না। এসব কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন দুলাল।

জেল থেকে মুক্ত হয়ে নতুন জীবন কী করে চলবেন, তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েন দুলাল। জীবনের এ পর্যায়ে এসে সহযোগিতা ছাড়া সমাজে আর প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে মুদি দোকান করবেন বলে ঠিক করেন তিনি। এরপর সেই আবদার তুলে ধরেন নওগাঁ জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়ালের কাছে।

দুলালের মা আয়েশা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে ফিরে পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমার ছেলেকে একটি বাড়ি তৈরি করে দিলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।’

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, সমাজে প্রতিটি মানুষের সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন থাকে। দুলালের জীবন থেকে ২৩টি বছর ঝরে গেছে। দুলাল হোসেন আগামীতে যাতে কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়েন, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আজকে (গতকাল) দুলালকে মুদি দোকান উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!