এক মাস ধরে হাঁটু পানিতে তলিয়ে আছে যশোরের মণিরামপুরের ভুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ। ফলে বিদ্যালয়ের পিটিএ সভাপতির বাড়ির উঠানে তাঁবু টানিয়ে চলছে পাঠদান। গত সোমবার তৃতীয় সাময়িক পরীক্ষার প্রথম দিনে সেই তাঁবুর নিচে পরীক্ষা নিতে দেখা যায় বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক সিপ্রা সরকারকে। অভিশপ্ত ভবদহের জলাবদ্ধতায় শুধু এই বিদ্যালয়ই নয়, উপজেলার অন্তত অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে অনেক স্কুলই শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোমরপানি ভেঙে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে। ক্লাসরুমে ঢুকতে না পেরে তাঁবুর নিচেই পরীক্ষা দিচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির শ্রেয়া বিশ্বাস, দেবব্রত বিশ্বাস ও পঞ্চম শ্রেণির কামনা বিশ্বাস, অনুষ্কা বিশ্বাসসহ আরও অনেকে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রাণেশ বিশ্বাস জানান, এক মাস ধরে স্কুল আঙিনা পানিতে ডুবে আছে। তাই পিটিএ সভাপতির বাড়িতে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। সভাপতি নিত্য বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে গ্রামের লোকজনের সহায়তায় বাঁশ-খুঁটি এনে উঠানে তাঁবু টানানো হয়েছে।’ এ অবস্থা শুধু ভুলবাড়িয়ায় নয়; কুমাসীমা, হাটগাছা, পাঁচকাটিয়া, মহিষদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু প্রতিষ্ঠানে বিকল্পভাবে ক্লাস চলছে।
জানা যায়, গেল কয়েকদিনের বৃষ্টির পানি ও উজানের ঢলে ভবদহ বিলপাড়ের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এএসএম জিল্লুর রশীদ বলেন, ‘উপজেলার অন্তত ২৫টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।’ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোতালেব জানান, ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা চলছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন