দীর্ঘ দুই দশকেও সংস্কারের মুখ দেখেনি নেত্রকোনার পূর্বধলায় মাত্র ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠেছে- আর কতদিন চলবে এই অবহেলা?
জানা যায়, পূর্বধলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে জারিয়া ইউনিয়নের বাড়হা গ্রাম পর্যন্ত রেললাইনের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া এই সড়কটি একসময় পিচ ঢালাই থাকলেও বর্তমানে তা খানা-খন্দে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষায় গর্তগুলোতে পানি জমে চলাচল একপ্রকার দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই সড়ক দিয়েই উপজেলা সদরসহ বুধি, বারধার, জুগলী, ভিতরগাঁও, মৌদাম, কান্দাপাড়া ও বাড়হা গ্রামের হাজারো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙা রাস্তা ব্যবহার করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদ মোড়ল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিদিন কাজে যেতে হয় এই রাস্তা দিয়ে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় হাঁটার উপায় থাকে না, কাদা আর পানিতে ভরে যায়। ছোট ছোট গর্তে পানি জমে থাকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ। স্কুলপড়ুয়া শিশু থেকে শুরু করে রোগী বহনকারী রিকশাও চলতে পারে না।’
অটোরিকশাচালক উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে এই দুর্ভোগ চলছে। প্রতিবার ভোটের আগে আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। আমরা কি নাগরিক হিসেবে একটু ভালো রাস্তা পাওয়ার অধিকারও রাখি না?’
রাস্তাটির ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ২০০৫ সালে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম ডা. মোহাম্মদ আলী জনগুরুত্ব বিবেচনায় এই রাস্তাটি পাকা করেছিলেন। কিন্তু এরপর থেকে আর কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে রাস্তাটি এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মিশুক কুমার দত্ত বলেন, ‘রাস্তাটি রেললাইনের পাশ দিয়ে নির্মিত হওয়ায় সংস্কারের জন্য রেলওয়ের অনুমতি প্রয়োজন। বারবার আবেদন করলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। অনুমতি পেলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে।’ স্থানীয়রা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অবহেলা দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। তারা দ্রুত রেলওয়ের অনুমতির বিষয়টি নিষ্পত্তি করে জনদুর্ভোগ লাঘবে রাস্তাটি সংস্কারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন