*** পৌর এলাকায় বাড়ছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে থানা সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরার অধিকাংশই এখন গায়েব। এই সিসিটিভি না থাকায় পৌর এলাকায় বাড়ছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ। তবে খুব শিগগিরই নতুন করে ক্যামেরা স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন বণিক সমিতি ও থানা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
গত ২০ দিনে ওষুধের দোকানসহ ১০টি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত চোর আটক বা মালামাল উদ্ধার হয়নি। জানা গেছে, রায়পুর উপজেলার ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভাটির আয়তন ৯.৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। থানার সামনে এক কিলোমিটারসহ পৌর এলাকায় অপরাধ রোধে ২০২২ সালে থানা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থাপন করা হয় ২০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা। এতে অপরাধ অনেকটাই কমে আসে। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনের সময় বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ভবন অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটপাটসহ পৌর শহরের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে বা খুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই অপরাধ বেড়ে গেছে।
স্থানীয় অটোচালক আলমগীর ও সিএনজিচালক সোহাগ বলেন, ‘আগে দিন-রাত সমান মনে করে অটো চালাতাম। ক্যামেরা থাকায় নিরাপদ বোধ করতাম। এখন রাস্তার ধারে অটো রেখে প্রস্রাব করতেও ভয় লাগে।’ কখন যে উধাও হয়ে যায়।
স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই শহর থেকে একাধিক দোকানে ও মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। ক্যামেরাগুলো সচল থাকলে এসব হয়তো ঘটত না।’
রায়পুর বণিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শহরে প্রায় ৮ হাজার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আগের মতো নির্ভয়ে ব্যবসা করা যাচ্ছে না। গত ২৫ দিনে ১০টি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে দুঃসাহসিক চুরি সংগঠিত হয়। প্রায় কোটি টাকার ওষুধসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে সঙ্ঘবদ্ধ চোরের দল। বণিক সমিতির উদ্যোগে থানার সামনেসহ পুরো শহরে ক্যামেরা স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে শহরে নৈশপ্রহরী নিয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
একসময় থানা থেকে পরিচালিত এসব ক্যামেরা বর্তমানে আর সচল নেই। হাতেগোনা কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ক্যামেরা থাকলেও অধিকাংশ জায়গায় কেবল ঝুলন্ত তার ও সেটআপ বক্সই দেখা যাচ্ছে।
রায়পুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জানান, ‘পৌর প্রশাসকের উদ্যোগে পুরো শহরে ক্যামেরার পয়েন্ট চিহ্নিত করার কাজ শুরু করা হবে। খুব শিগগিরই ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করা হবে।’
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিসিটিভি ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ। দুঃখজনকভাবে ৫ আগস্টের ঘটনায় অধিকাংশ ক্যামেরা ভাঙচুর ও চুরি হয়েছে। পুনরায় সিসিটিভি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুতই বাস্তবায়নের চেষ্টা চলমান।’