- গাইড ওয়াল হেলে পড়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক
- ১৬ মিলিমিটারের পরিবর্তে ১২ মিলিমিটার রড ব্যবহার
- প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে উদ্বোধনের আগেই কালভার্টের গাইড ওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে, হেলে পড়েছে কালভার্ট। বিষয়টি জানাজানির পর হুড়োহুড়ি করে বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ফাটল ঢেকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।
উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ডিক্রিরচর গ্রামের বায়তুল আমান জামে মসজিদ সংলগ্ন খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতু ঘিরে এমন কা- ঘটেছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, বেশ কিছুদিন আগে শুরু হয় কালভার্টের নির্মাণকাজ। হুড়োহুড়ি করে কাজ বুঝিয়ে দিতে রাত-দিন সমান তালে কাজ চালিয়ে যায় ঠিকাদার। রাতের আঁধারে নি¤œমানের রড দিয়ে করা হয় বেইজের কাজ। পরে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টির পর স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাতে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে শুধু দিনের বেলায় কাজ করতে বলেন। এই পরিস্থিতিতে গত ২ সেপ্টেম্বর শেষ হয় কালভার্ট নির্মাণকাজ। কাজ শেষ না হতেই কালভার্টের চারটি গাইড ওয়াল ফাটল দেখা দেয়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানির পর ফাটল স্থানে বালু-সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তবে ফাটলের কারণে হেলে পড়েছে কালভার্টটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বালু-সিমেন্টের প্রলেপে ঢেকে রাখা হয়েছে কালভার্টের গাইড ওয়াল। এর দুপাশে চলছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। গাইড ওয়ালে ফাটলের করণে কালভার্টটি একপাশে হেলে পড়েছে। এ সময় স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ১৬ মিলিমিটার রড দেওয়ার কথা থাকলেও ১২ মিলিমিটার রড ব্যবহার করে রাতের আঁধারে কালভার্টের বেইজের কাজ করা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৪-২৫ অর্থবছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের কালভার্টের নির্মাণকাজ পায় ‘সালেহা কবির এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার মো. মনির।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সোহেল হোসেন বলেন, নির্মাণাধীন বক্স কালভার্টে ফাটলের বিষয়টি শুনেছি। এখনো কাজ হস্তান্তর হয়নি। ওই কাজের বিল এখনো ঠিকাদার পায়নি। অভিযোগ তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও ফারুক আহমেদ বলেন, রাতে কাজ করার অভিযোগ উঠায় ওই কালভার্ট পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তখন দিনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। এখন গাইড ওয়ালে ফাটলের একটি ভিডিও পেয়েছি। আমি আবারও গিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।