নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় করা মাদক মামলায় উদ্ধার গাঁজার পরিমাণে কম দেখানোর অভিযোগে এক এসআইসহ তিন পুলিশকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বুধবার বিকেলে পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যরা হলেন- বড়াইগ্রামের বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আব্দুর রাজ্জাক ও সঙ্গীয় দুই কনস্টেবল আব্দুর রহমান ও শাহ আলম।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের ছাতিয়ানগাছা মোল্লাপাড়া মোড়ে একটি কাভার্ডভ্যান আটক করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সেখানে যান ওই উপ-পরিদর্শকসহ ৩ পুলিশ। এ সময় ভ্যানটি তল্লাশি করে কালো এক বস্তা গাঁজা জব্দ করা হয়। ওই সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ছাতিয়ানগাছা গ্রামের আসাদুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছাতিয়ানগাছা মোল্লাপাড়া মোড়ে একটি নীল রঙের কাভার্ডভ্যান থেকে দুজন লোক একটি বড় পলিবস্তা নামাচ্ছিলেন। এলাকাবাসী চোর সন্দেহে ধাওয়া দিলে তারা বস্তা ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর উৎসুক স্থানীয়রা কাভার্ডভ্যানসহ চালক লালমনিরহাট জেলার সিংগাদার গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সায়েম হোসেনকে (৩৪) আটক করে। খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পর বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।
ছাতিয়ানগাছা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও মোস্তাক হোসেন জানান, পুলিশ পৌঁছার পর তারা নিজেরা গুনে ১৪টি পলিথিনের ব্যাগভর্তি গাঁজা পুলিশকে বুঝিয়ে দেন। প্রতিটি পলিথিনের ব্যাগে অন্তত ২ কেজি করে ২৮ কেজি গাঁজা ছিল। ওই সময় তারা ডিজিটাল দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এসে গাঁজা পরিমাপ করতে চাইলেও পুলিশ তা করতে দেয়নি। এমনকি সংবাদ কর্মীদের খবর দিতে চাইলেও তারা স্থানীয়দের সঙ্গে রাগারাগি করেন। অথচ পরে জানতে পেরেছি যে, ওই আসামির নামে মাত্র সাত কেজি গাঁজা দিয়ে মামলা করা হয়েছে।
এদিকে এ বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশদের বিরুদ্ধে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলতে থাকে।
এ ব্যাপারে নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, বিষয়টি নজরে এলে বুধবার ওই ৩ পুলিশকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাটি তদন্তে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভন চন্দ্র হোড়কে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ দিনের মধ্য তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভন চন্দ্র হোড় জানান, তিনি তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।