বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:৩৫ এএম

কপির চারা উৎপাদনে স্বাবলম্বী চাষিরা

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:৩৫ এএম

কপির চারা উৎপাদনে স্বাবলম্বী চাষিরা

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গা গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। এখানকার উৎপাদিত চারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ভরা মৌসুমে চারা উৎপাদন, পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় নারী-পুরুষ। চলতি মৌসুমে ৬৪ চাষি প্রায় সাড়ে ৭ হেক্টর জমিতে চারা উৎপাদন করেছেন। এবার ৩৫ কোটি টাকার চারা বিক্রির আশা করছেন তারা।

সরেজমিনে জানা গেছে, এক যুগ আগে থেকে আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গায় বাণিজ্যিকভাবে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চারার আবাদ চলছে। বর্তমানে মাঠের পর মাঠ জমিতে কপির চারা উৎপাদন করা হয়েছে। আব্দুলপুর গ্রামটি কপি পল্লি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। চারা উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় আবাদকারীদের সংখ্যাও বেড়েছে। নিজস্ব জমি না থাকলেও ভাগ্য বদলের আশায় অনেকেই জমি লিজ নিয়ে ঝুঁকেছেন।

কয়েকজন চাষি জানান, প্রতি বেডে চারা উৎপাদনে তাদের খরচ হয় আনুমানিক ১ হাজার টাকা। কিন্তু বেড প্রতি আড়াই হাজার টাকার বেশি চারা বিক্রি করা সম্ভব হয়। এজন্য প্রতি মৌসুমে চারা উৎপাদনে চাষির পরিমাণ বাড়ছে। গত মৌসুমে ৩০ কোটির বেশি টাকার বেশি কপি চারা বিক্রি করেছিলেন। চলতি মৌসুমে ৩৫ কোটির টাকার চারা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। এবার চারা উৎপাদনে আবাদি জমি বেড়েছে। ফলে বিক্রিও বেশি হবে।

আব্দুলপুর গ্রামের চাষি আজিজুর রহমান জানান, মৌসুমের শুরুতে জমিতে বেড দিয়ে বীজতলা প্রস্তুত করা হয়। তারপর বপন করা হয় বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ। বীজ থেকে চারা গজাতে এক মাস সময় লাগে। এই চারা চাষিদের কাছে বিক্রি করা হয়। তিনি ১০ বছর ধরে কপির চারা উৎপাদন করছেন। এবারও তিনি ১২ কাটা জমিতে মোট ৮০টি বেড তৈরি করে বাঁধা কপির বীজের আবাদ করেছেন। 

চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরুণ কুমার জানান, আষাঢ়ের শুরুতে জমিতে বেড দিয়ে বীজতলা প্রস্তুত করা হয়। তারপর বপন করা হয় বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ। বীজ থেকে চারা গজাতে এক মাস সময় লাগে। এভাবে তারা একই জমিতে ৫ ধাপে চারা উৎপাদন করেন। ইতোমধ্যে ৩ ধাপে উৎপাদিত চারা বিক্রি শেষ পর্যায়ে। চাষিরা সামনে আরও দুই ধাপে চাষিরা উৎপাদন করতে পারবে। তিনি আরও জানান, ফুলকপির ভালো মানের চারা ১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর বাঁধাকপির প্রতিটি চারা (গ্রিন-৬০) ৫০ পয়সা ১ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন চাষিরা।

চারা উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বীজতলার আকার ১ মিটার পাশে ও লম্বায় ৩ মিটার হওয়া উচিত। সমপরিমাণ বালি, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে বীজতলা তৈরি করতে হয়। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের আগে ৭/৮ দিন পূর্বে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। পরে চারা ঠিকমতো না বাড়লে প্রতি বীজতলায় প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দেওয়া ভালো।

যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুরে বাণিজ্যিকভাবে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা উৎপাদন হয়। এবার ৬৪ কৃষক সাড়ে ৭ হেক্টর জমিতে চারা উৎপাদন করেছেন। এসব চারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। চারা উৎপাদন করে অনেকই নিজেদের ভাগ্য ঘুরিয়েছেন। অনেক কৃষক হয়েছেন লাখপতি। উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় নতুন নতুন চাষি আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, আব্দুলপুর ও বাগডাঙ্গার কপির চারা উৎপাদনের মাঠ একাধিকবার পরিদর্শন করা হয়েছে। চাষিরা কপির চারা উৎপাদনে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উন্নত মানের চারা উৎপাদনে চাষিদের পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় চাষিদের খোঁজখবর রাখছেন। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!