ঝিনাইদহে রোপা আমন মৌসুমের শুরুতেই ধানের জমিতে দেখা দিয়েছে মাজরা পোকার আক্রমণ। কীটনাশক দিলেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না পোকা। পোকার আক্রমণে ধানের গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। নানা কীটনাশক ব্যবহার করেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না এ পোকা। এতে উৎপাদন খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনি ফলন নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কৃষকদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে তারা মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়বেন।
জানা গেছে, জেলা সদরসহ শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, হরিণাকু-ু, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলাতেও একই পরিস্থিতি। ধানগাছের গোড়ায় আক্রমণ করছে মাজরা পোকা। এতে অনেক গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি।
কৃষকরা বলছেন, বারবার কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে না। পোকার আক্রমণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৯ মেট্রিক টন। তবে মৌসুমের শুরুতেই পোকার এমন আক্রমণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
সদর উপজেলার কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, তিন একর জমিতে রোপা আমন করেছি। মাজরা পোকার কারণে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। পোকা দমনে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করছি, তার পরেও পোকা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না।
কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষির প্রধান ভরসা হচ্ছে আমন ধান। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই যদি পোকা আক্রমণ করে, তাহলে আমরা কীভাবে বাঁচব। সরকারি দিকনির্দেশনা আর সহযোগিতা ছাড়া আমাদের সামনে অন্ধকার ছাড়া কিছু নেই।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নূর এ নবী বলেন, এখনো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কৃষকরা যদি কৃষি বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলেন, তাহলে পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। আমরা কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।