চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভাকে বিভক্ত করে রেখেছে হালদা নদী। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় ‘রশির টানা নৌকা’য় ভরসা করে দুই পাড়ের মানুষ যাতায়াত করে আসছে। বর্ষার ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্রায়ই সাঁকো ভেঙে নদীতে ভেসে যায়, কখনো নৌকা ডুবে ঘটে প্রাণহানি। স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরেও সেতু না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে হাজারো মানুষকে। অবশেষে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত পাঁচপুকুরিয়া হালদা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুর ৩৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৪৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য সেতুটি হবে ৯ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থ এবং ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে। সেতুর মোট পিলার থাকবে ৮টি। নির্মাণকাজের প্রকৌশলী খলিলুর রহমান জানান, গুণগত মান বজায় রেখে দক্ষ শ্রমিক দিয়ে বিরামহীনভাবে কাজ চলছে।
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম বলেন, ‘কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগোচ্ছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’
সেতুটি চালু হলে সুন্দরপুর, নাজিরহাট পৌরসভা, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে যাবে। একই সঙ্গে সেতুটি পূর্বে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং পশ্চিমে চট্টগ্রাম-কাজীরহাট-হেয়াকো সড়কের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হবে। এতে দুই পাড়ের মানুষের জীবনমানের আমূল পরিবর্তন ঘটবে এবং কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করা যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা শিবু চক্রবর্তী বলেন, ‘কিছুদিন আগেও হালদা পার হতে গিয়ে এক যুবক সাঁকো থেকে পড়ে মারা যান। এ রকম মৃত্যুর ঘটনা অহরহ ঘটেছে। সেতুটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হবে।’
নাজিরহাট পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর গাজী আমান উল্লাহ বলেন, ‘আমরা চাই সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হোক। কাজের গুণগত মান বজায় রাখতে যথাযথ তদারকি জরুরি।’
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘হালদা নদীর ওপর এ সেতু না থাকায় অতীতে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মেয়াদকালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এতে দুই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত হবে।’