ঢাকা শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫, ১২:৩৮ এএম

প্রতিবছর রবি মৌসুমের শীতকালীন সবজি চাষ করে কমবেশি লাভবান হয়ে থাকেন কৃষকরা। যা মৌসুমের অন্য সময় চাষাবাদ করলে না-ও হতে পারে। এ কারণে প্রতিবছর ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েন তারা।

বগুড়ার সবজিখ্যাত এলাকাগুলোর মধ্যে শিবগঞ্জে এখন আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। শীত আসায় দেরি থাকলেও কৃষকরা বসে নেই। ভালো ফলন পাওয়ার আশায় জমিতেই সময় দিচ্ছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরগুলোর মতো এবারও ভালো সবজির উৎপাদন হবে। এবার শীতকালীন আগাম সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজির চাষ হয়েছে। আগাম শীতকালীন সবজির মধ্যে রয়েছেÑ মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, গাজর, লাউ, পুঁইশাক, পালং শাক ও শিম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে।

জানা যায়, বগুড়াকে সবজিভান্ডার বলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে শিবগঞ্জ অন্যতম। শীতকালীন সবজি প্রচুর পরিমাণে চাষ হয় এই উপজেলায়। আগামজাতের সবজিতে বেশি লাভবান হওয়া যায় বলে কৃষকরা বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। এখনো শীত মৌসুম শুরু না হলেও শীতের সবজি চাষ শুরু হয়েছে। উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকরা জমিতে হালচাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ইতিমধ্যেই সবুজে সবুজে ভরে উঠছে উপজেলর বিভিন্ন মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি বিভিন্ন জাতের সবজির গাছ। এসবের মধ্যে শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপির চারা, লাউ, শিম, মুলা, পালং ও লালশাকসহ হরেক রকমের শীতকালীন সবজি। কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সবজি চাষে যুক্ত জেলার কৃষকরা এবার বেশ উৎফুল্ল। কারণ তারা আশা করছেন, অনুকূল পরিবেশের জন্য এবারও উৎপাদিত ফসলের ফলন ও দাম বেশ ভালো পাবেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর শ্যামপুর গ্রামের কৃষক মো. বাদশা মিয়া সরকার বলেন, তিনি এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছেন। সবজি চাষে একটু বেশি পরিচর্যা করতে হয়। খুব কম সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় দিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হয়। জমিতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কম-বেশি টাকা থাকে। যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব নয়। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো।

এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিবছর বিভিন্ন জাতের আগাম সবজি চাষ করে থাকি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর ৩ বিঘা জমিতে সবজি চাষ করছি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর সার-কীটনাশকসহ অন্যান্য জিনিসের দাম অনেক বেশি। যে কারণে সবজি চাষে খরচও আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। তবে আশা করছি, এবার ভালো ফলন পাব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে আগাম ৫৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে। এখানকার চাষকৃত শাক-সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদনে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। শাক-সবজি চাষ কীভাবে বাড়ানো যায়, সে লক্ষ্যে পরামর্শের পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি অফিস সব সময় কৃষকদের পাশে আছে।