- প্রতিজনকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও বস্তা মাপলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ১-২ কেজি করে কম পাওয়া যাচ্ছে
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ৭নং পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) চাল বিতরণে ওজনে কারচুপি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, প্রতিজনকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও বস্তা মাপলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ১-২ কেজি করে কম পাওয়া যাচ্ছে।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে কয়েকজন উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩০ কেজির চালের বস্তায় ওজন পাওয়া যাচ্ছে ২৮ বা ২৯ কেজি। তারা অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী ডিলারদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে সুবিধা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাই বাধ্য হয়েই যা দেয় তাই নিতে হয়।
ঘোষফিল্ড এলাকার জনি নামের এক উপকারভোগী বলেন, ‘আমার বস্তায় ২৮ কেজি চাল ছিল। কার্ডের জন্য ১০০ টাকা নিয়েছে।’ স্থানীয়রা জানান, এই ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় প্রতি কেজি ১৫ টাকায় চাল বিক্রির দায়িত্বে আছেন দুজন ডিলার, মো. ইসরাফিল ও আরিফ। এ কর্মসূচির সুবিধাভোগীরা সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের জন্য নির্ধারিত চালেও যদি দুর্নীতি হয়, তা মেনে নেওয়া যায় না।
অভিযোগের বিষয়ে ডিলার ইসরাফিল ও আরিফ জানান, খাদ্যগুদাম থেকেই কম চাল দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাতায়াতের সময় বস্তা ছিঁড়ে বা পড়ে কিছু চাল নষ্ট হয়ে যায়। ডিলার আরিফ বলেন, ‘কিছু বস্তায় ১-২ কেজি কম থাকে, আবার কখনো ১২ কেজি পর্যন্তও কম থাকে। সব বস্তা তো মেপে আনা সম্ভব না। কর্মকর্তারা বিষয়টা জানেন।’
দুই ডিলারের অধীনে মোট ৮১৭টি কার্ড রয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন, ‘প্রতিজনের কাছ থেকে যদি ২ কেজি করে কম দেওয়া হয়, তাহলে ১ হাজার ৬৩৪ কেজি চাল যায় কোথায়?’ এলাকাজুড়ে গুঞ্জন উঠেছে, এ চালের একটি অংশ বাইরে বিক্রি বা পাচার করে দেওয়া হয়।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা প্রবীর কুমার ম-ল বলেন, ‘আমরা বারবার ডিলারদের সতর্ক করেছি, যেন নির্ধারিত ওজনে চাল বিতরণ করে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ‘অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। ৩০ কেজির কম দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা চান, সরকারি চাল নির্ধারিত ওজনে ও মূল্যে যেন সঠিকভাবে সুবিধাভোগীদের হাতে পৌঁছে এবং চাল বিতরণে অনিয়ম বন্ধ হয়।