ঢাকা বুধবার, ০১ অক্টোবর, ২০২৫

মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি হ্রাস

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৫, ০২:০৩ এএম

দেশে বর্তমানে মার্কিন ডলারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও গত আগস্টে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) নিষ্পত্তি কমেছে। এর প্রধান কারণ মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি হ্রাস, যা নতুন ব্যবসা ও বিনিয়োগে স্থবিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক মাসে নতুন এলসি খোলার প্রবণতা কমে যাওয়ায় এবং ওভারডিউ (মেয়াদোত্তীর্ণ বা বকেয়া) এলসির চাপ কম থাকায় নিষ্পত্তি কমেছে। একই সঙ্গে নতুন বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির পরিবর্তে ভোগ্যপণ্যের আমদানিতে বেশি ঝুঁকছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্টে আমদানি দায় নিষ্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৫ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। নিষ্পত্তি কমেছে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তবে এ সময় নতুন এলসি খোলার পরিমাণ ৩ দশমিক ০৬ শতাংশ বেড়ে ৫ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের আগস্টে ছিল ৫ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।

অর্থবছর হিসাবে সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে আমদানির জন্য এলসি খোলা বেড়েছে ১ শতাংশেরও কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেখানে ৬৮ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল, সেখানে গত অর্থবছরে তা ছিল ৬৯ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার। অর্থনীতির আকার ও জনসংখ্যা বাড়লেও আমদানি কার্যত স্থবির অবস্থায় রয়েছে।

তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ধস নেমেছে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতে ২৩৪ কোটি ডলারের এলসি খোলা হলেও গত অর্থবছরে তা নেমে আসে ১৭৫ কোটি ডলারে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ২৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরেও এই খাতে প্রায় ২৪ শতাংশ পতন হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি সাড়ে ১১ শতাংশ কমেছে।

এ ছাড়া শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য আমদানির এলসিও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এ ক্ষেত্রে পতনের হার ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। একইভাবে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলা কমেছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। ফলে শিল্প স্থাপন, উৎপাদন বৃদ্ধি ও রপ্তানি আয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত মৌলিক তিন উপকরণÑ মূলধনী যন্ত্রপাতি, মধ্যবর্তী পণ্য ও কাঁচামাল আমদানিতে নি¤œমুখী প্রবণতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।