- নিরুপমা নামের ওই নারী রক্ত দালালির অভিযোগে ধরা পড়েন
- ঘটনাটির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নারী দালালকে গালিগালাজের অভিযোগে মারধর করেছেন মিম ফয়সাল নামে এক নারী স্বেচ্ছাসেবক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অভিযুক্ত মিম ফয়সাল পাবনা শহরের পাওয়ার হাউজপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং নিজেকে স্বপ্নছায়া ব্লাড ডোনার ক্লাব ও বন্ধুত্বের বাঁধন ব্লাড ডোনার ক্লাবসহ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পরিচয় দেন।
ভুক্তভোগী নারী নিরুপমা পাবনা সদর উপজেলার রাখালগাছি এলাকার বাসিন্দা। ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালে একটি কক্ষে নিরুপমাকে মারধর করছেন মিম ফয়সাল। পাশে হ্যান্ডক্যাপ দিয়ে আটকানো এক ব্যক্তিকেও বসে থাকতে দেখা যায়।
মারধরের কারণ জানতে চাইলে মিম ফয়সাল জানান, নিরুপমা একজন রক্ত দালাল। তিনি টাকার বিনিময়ে রক্ত কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। তবে গালিগালাজ ও খারাপ আচরণের কারণে তাকে মারধর করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলার তারা খাতুন তার অসুস্থ মায়ের জন্য রক্ত খুঁজছিলেন। এ সময় নারী দালাল নিরুপমা টাকার বিনিময়ে রক্ত সরবরাহের প্রস্তাব দেন। এক ব্যাগ রক্তের জন্য আটঘরিয়া উপজেলার হান্নান প্রামানিক নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ৫ হাজার টাকায় চুক্তি হয়।
গত সোমবার বিকেলে হান্নান প্রামানিক রক্ত দিতে হাসপাতালে এলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। পরে স্থানীয়রা নিরুপমা ও হান্নানকে আটক করে প্রশাসনকে খবর দেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফুয়াদ ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পান। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নিরুপমা ও হান্নানকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়।
তবে এর আগে নিরুপমাকে মারধর করেন মিম ফয়সাল। প্রশাসনের উপস্থিতির পরও কেন মারধর করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, প্রশাসনের লোকজনই নারী দালালকে শাসন করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘ডিবি পুলিশের উপস্থিতিতে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফুয়াদ বলেন, ‘ডিবি পুলিশ যাওয়ার অনেক পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। নারী দালালকে মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
এ ঘটনাকে ঘিরে হাসপাতালে রক্ত দালালচক্র ও স্বেচ্ছাসেবকদের আচরণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, রক্ত বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।