সবজির রাজ্য হিসেবে পরিচিত যশোর। এখানে উৎপাদিত সবজির দেশে-বিদেশে সুনাম রয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সবজিখেত ও বীজতলা নষ্ট হয়েছে। চাষিরা বলছেন, বৃষ্টি তাদের স্বপ্ন ভেঙেছে। সেই সঙ্গে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
জানা গেছে, এবার যশোর সদরে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে অগ্রিম শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নে। আবাদ করা সবজির মধ্যে- বাঁধাকপি, ফুল কপি, শিম, পটোল, বেগুন, করলা, ঝিঙে, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, লালশাক, ডাটাশাক, কাঁচামরিচ উল্লেখযোগ্য। তবে গত দেড় মাসের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে সবজিখেতে পানি জমে কোথাও গাছ পচে যাচ্ছে কোথায় ফুল-ফল এমনকি চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষাবাদ, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।
যশোরের-চৌগাছা সড়কের আব্দুলপুর গ্রামের সড়কের দুই পাশে তাকালেই দেখা যাবে শত শত পলিথিনে ঢাকা রয়েছে সবজির বীজতলা। প্রতিবছর আষাঢ় মাস থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় বীজতলা প্রস্তুত করে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ বপন করেন প্রায় ৭০ জন কৃষক। তবে গত জুলাই থেকে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন চাষিরা। এবার ৭০০ হেক্টর জমিতে চারা উৎপাদন করা হয়েছিল।
চুড়ামনকাটি এলাকার সবজিচাষি শহিদুল ইসলাম, আশাদুল ইসলাম ও শামীম হোসেন জানান, দুই বছর ধরে গ্রীষ্মকালীন সবজি করে ক্ষতির মুখে আছি। গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাত আরও বেশি । বৃষ্টির কারণে শিম, পটল, বেগুন, লালশাক অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। হৈবতপুরের সবজিচাষি রওশন আলী, মিজানুর, জয়নাল, হাফিজুর রহমানসহ অনেকেই জানান, ভারী বৃষ্টি তাদের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। শিম, পটোল, করলা, বেগুনগাছে পচন ধরে শুকিয়ে গেছে। আবাদের খরচ উঠবে কি না সন্দেহ। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন করে সবজি চাষ করতে পারেনি অনেকে। সবজির আবাদ করে এবার চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কাশিমপুরের দৌলতদিহি গ্রামের চাষি রিপন হোসেন জানান, বৃষ্টিতে এবার আগাম শীতকালীন সবজি চাষ ব্যাহত হয়েছে। ফলে প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে। যার কারণে চড়া দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। এবার শীতকালীন সবজি বাজারে দেরিতে আসবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন জানান, এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। সেপ্টেম্বর থেকে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি ও বীজতলার একটু ক্ষতি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন