রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সফিউল ইসলাম, দৌলতপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৩:০৯ এএম

জনবল সংকটে ধুঁকছে পশু হাসপাতাল

সফিউল ইসলাম, দৌলতপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৩:০৯ এএম

জনবল সংকটে ধুঁকছে পশু হাসপাতাল

চরম জনবল ও চিকিৎসক সংকটে ভুগছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও পশু হাসপাতাল। এর ফলে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার খামারি ও কয়েক লাখ প্রান্তিক কৃষক চরম বিপাকে পড়েছেন। এক মাস আগে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বদলি হওয়ার পর সংকটে থাকা কার্যালয়টির আরও নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ দপ্তরে ১১টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র একজন ড্রেজার ও একজন উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাণিস্বাস্থ্য)। বাঁকি ৯টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ভেটেরিনারি সার্জন (ভিএস) পদটি শূন্য রয়েছে প্রায় ৪ বছর। এর মধ্যেও একমাত্র উপসহকারী কর্মকর্তা বর্তমানে অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় কার্যত পুরো অফিসের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।

এদিকে মাসখানেক আগে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বদলি হওয়ায় দৌলতপুরের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পার্শ্ববর্তী মিরপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে। কিন্তু নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করায় দৌলতপুরে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে পশুর চিকিৎসা দেওয়া তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে স্থানীয় খামারিরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জানা যায়, দৌলতপুরে প্রায় ৮ লাখ মানুষের বসবাস। বৃহৎ এ উপজেলায় সাড়ে ৩ লাখের বেশি গবাদি পশু ও ১০ লাখের বেশি হাঁস-মুরগি রয়েছে। কৃষি ও পশু পালন এখানকার মানুষের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার অন্যতম উৎস। কিন্তু চিকিৎসক সংকটে পশুগুলো সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। আবার অসুস্থ হলেও বঞ্চিত হচ্ছে সুচিকিৎসা থেকে। এতে খামারিরা বাধ্য হচ্ছেন গ্রাম্য ও অশিক্ষিত হাতুড়ি পশু চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে। ফলে পশু মৃত্যুর হারও বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে খরচও।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে দৌলতপুরে প্রকল্পভিত্তিক আরও ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। তবে তাদের নিয়োগের মেয়াদ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ শেষ হবে। এর মধ্যে ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প’-এর ৪ জন এবং ‘উন্নত জাতের ঘাস চাষ প্রকল্প’-এর একজন দায়িত্বে রয়েছেন।

উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের এনএসআর অ্যাগ্রো ফার্ম অ্যান্ড ফিশারিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত নাইম ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে জনবল-সংকটের কারণে আমরা সঠিক সময়ে পশুগুলোর চিকিৎসা করাতে পারি না। এখন তো কোনো স্থায়ী পশু ডাক্তার নেই। ডাকলেও আসেন না, এলেও টাকা দাবি করেন। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের পশুচিকিৎসকদের দ্বারস্থ হচ্ছি। আমাদের খামারে ৮০টির মতো গরু-মহিষ রয়েছে। তাদের সেবা দেওয়া এখন খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।

একই অভিযোগ করে পশু পালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত ৪ দিন ধরে আমার দুটি গরু অসুস্থ। হাসপাতালে কোনো ডাক্তার না থাকায় গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। এতে পশুর মৃত্যুঝুঁকি থেকে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা নিরুপায়।

এ বিষয়ে দৌলতপুরে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মিরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, বর্তমানে দৌলতপুরে মাত্র দুজন দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া প্রকল্পের অধীনে আরও পাঁচজন আছেন। আমরা নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে আসছি। সংকটের কারণে খামারি ও চাষিরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। অনেকে গ্রাম্য চিকিৎসকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মামুন হোসেন ম-ল বলেন, জেলার প্রায় সব উপজেলায় জনবল-সংকট রয়েছে। তবে দৌলতপুরের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। সেখানে বর্তমানে কোনো সার্জন বা স্থায়ী কর্মকর্তা নেই। মিরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!