*** মৎস্যজীবীদের মানবেতর জীবনযাপন
রাজশাহীর তানোরে ঐতিহ্যবাহী বিল কুমারী বা শিব নদীতে পানি থাকলেও নেই মাছ। ফলে বিল কুমারী এলাকাসংলগ্ন মৎস্যজীবীরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকেই মরার ওপর খাঁড়ার ঘা নামক কিস্তি পরিশোধের জন্য কাজের সন্ধানে চলে যাচ্ছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। জানা গেছে, পৌর সদর কুঠিপাড়া, শীতলীপাড়া, গোল্লাপাড়া ও হলদারপাড়ার বেশির ভাগ মানুষই বিল থেকে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু এবারের বিলে পানি থাকা সত্ত্বেও মাছের অভাবে দিন আনে দিন খায় মানুষরা দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া মৎস্যজীবীরা বাধ্য হয়ে ভাড়া রিকশা চালানো বা অন্য জেলা-ঢাকায় কাজ করতে যাচ্ছেন।
শীতলীপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবী আজিমুল, আলমগীর, মোস্তফা, সাইফুল ও সোনা বলেন, ‘গত বছর পানি কম থাকলেও কিছু মাছ পাওয়া যেত। এবারে পানি থাকা সত্ত্বেও মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবার নিয়ে বাঁচার জন্য বাধ্য হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে যাচ্ছি। ভাড়া রিকশা চালিয়ে দিনে ৫-৭ শত টাকা রোজগার করি। তাতে হলেও পরিবারের দুমুঠো খাবার জোগানো যায়।’
বয়োজ্যেষ্ঠ মৎস্যজীবী জলিল, শখিন ও মফিজ অভিযোগ করেন, ‘বিলে মা-মাছসহ ছোট মাছের ব্যাপক আহরণ, অসাধু মৎস্যজীবীদের ঘিরে মাছ ধরার কারণে সাধারণ মানুষ মাছ পাচ্ছেন না। আমরা চাই মৎস্য দপ্তরের বিশেষ নজর ও সহায়তা।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি, তাই এ বিল সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। তবে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, মা-মাছ আহরণ, কীটনাশক ব্যবহার এবং অসময়ে বন্যার কারণে মাছ কম থাকতে পারে বলে মনে করি। স্থানীয়ভাবে এ সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মৎস্যজীবীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ সম্ভব হয় এবং তাদের মানবিক দুরবস্থা দূর করা যায়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন