রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০১:৫০ এএম

শীতের আগমনী বার্তা, খেজুর গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত গাছিরা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০১:৫০ এএম

শীতের আগমনী বার্তা, খেজুর  গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত গাছিরা

চুয়াডাঙ্গার মাঠে মাঠে বইছে শীতের আগমনী বার্তা। সকালের কুয়াশা আর শিশির ভেজা ঘাস জানান, দিচ্ছে শীতের আগমন। আর এ সময়টাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে। শীত মানেই খেজুর রস, নলেন গুড় আর পাটালির মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা গ্রামবাংলা। একসময় জেলার চারটি উপজেলাজুড়ে খেজুর গাছের ছায়ায় ভরে থাকত গ্রামাঞ্চল। শীত এলেই ব্যস্ত হয়ে উঠতেন গাছিরা। বিকেলে গাছে হাঁড়ি টানানো আর সকালে রস সংগ্রহ এটাই ছিল তাদের দৈনন্দিন রুটিন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলত গুড় ও পাটালি তৈরির কাজ। সেই গন্ধে ভরত পুরো গ্রাম।

এখনও সেই ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন চুয়াডাঙ্গার গাছিরা। বিশেষ করে জীবননগর, দামুড়হুদা, হিজলগাড়ি ও গয়েশপুর এলাকায় চলছে খেজুরগাছ প্রস্তুতের ব্যস্ততা। গাছিরা হাতে দা আর কোমরে দড়ি বেঁধে গাছ চাঁছাছোলা ও নলি বসানোর কাজ করছেন। বিকেলে গাছে বাঁধা হয় ছোট-বড় মাটির হাঁড়ি, আর সকালে সংগ্রহ করা হয় রস। কেউ বিক্রি করেন কাঁচা রস, কেউ আবার তৈরি করেন গুড় ও পাটালি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ‘এ বছর জেলায় রস সংগ্রহের জন্য প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রতি গাছ থেকে গড়ে ১০ কেজি গুড় উৎপাদন সম্ভব। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭০০ টন গুড়। জেলার প্রায় ৩০ হাজার চাষি এ মৌসুমি পেশায় যুক্ত আছেন।’ তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গার গুড়ের চাহিদা সারা দেশেই বেশি। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে।

জীবননগরের গয়েশপুর গ্রামের গাছি আ. রশিদ বলেন, ‘১৫ দিন ধরে গাছ প্রস্তুতের কাজ করছি। গাছের অপ্রয়োজনীয় ডাল ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ধারালো দা দিয়ে সোনালি অংশ বের করে নলি বসানো শেষ পর্যায়ে। কয়েকদিন পরই গাছে লাগানো হবে পাতিল, তারপরই শুরু হবে রস সংগ্রহ।’ তিনি জানান, মৌসুমের শুরুতে এক কেজি গুড় বিক্রি হয় ১৫০-২০০ টাকায়, পরে দাম নেমে আসে ১০০ টাকার নিচে।

দামুড়হুদার রহিম বকসো বলেন, ‘শীতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে খেজুর রসের ঐতিহ্য। আমার নিজের ৭০টি গাছ আছে, বর্গা নিয়েছি আরও ৫০টি। একবার ছাঁটলে তিন-চার দিন রস সংগ্রহ করা যায়।’

হিজলগাড়ির গাছি মশিয়ার বলেন, ‘যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে, তাতে একসময় হয়তো দেশ থেকে খেজুরগাছই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ঐতিহ্য রক্ষা করতে হলে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে এবং যতœ নিতে হবে।’

স্থানীয়রা বলছেন, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার জ্বালানির কাজে প্রতিদিন নিধন হচ্ছে শত শত খেজুরগাছ, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবু গাছিরা ঐতিহ্য ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর মাত্র কয়েকদিন পরই শুরু হবে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির ধুম। হেমন্তের শেষে বাজারে উঠবে নলেন গুড় ও পাটালি, আর সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে খেজুর রসের মিষ্টি ঘ্রাণ।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!