যে নদী বারংবার বাঁক বদলায়, তার কূলে দাঁড়িয়ে আমরা এক পলকে দেখতে পাই বহু যুগের স্রোত। এই স্রোত কেবল জলধারা নয়, ইতিহাসেরও। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশও তেমনই এক প্রবহমান নদীর নাম। এর বুকে যেমন আছে সবুজ ফসলের অবারিত মাঠ, তেমনি আছে দীর্ঘশ্বাস আর না পাওয়ার বেদনার বালুচর। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে এসে, আমরা দাঁড়িয়েছি ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে; এক অভূতপূর্ব জাগরণ ও পরিবর্তনের মুখে। মুহূর্তটি কেবল একটি রাজনৈতিক পালাবদল নয়, এটি যেন প্রকৃতিরই এক নিবিড় ইশারা, যেখানে বহু পুরোনো ধূসর মেঘ কেটে গিয়ে রক্তিম সূর্যের উদয় হয়েছে। আজকের এ পরিবর্তন কেবল ক্ষমতার হাতবদল নয়, এ হলো আস্থার সংকট, অবিচারের দীর্ঘ ছায়া এবং স্বপ্নভঙ্গের ক্লান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার এক গণআকাক্সক্ষা।
আমরা সেই জাতি, যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, স্বাধীনতার জন্য সাগর-সমান ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমাদের চেতনার মূল ভিত্তি হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। কিন্তু সময়ের ফেরে, সেই অঙ্গীকারের স্ফটিক স্বচ্ছতা যেন কোথাও ঘোলাটে হয়ে গিয়েছিল। ক্ষমতা যখন জনসেবার পথ ভুলে পরিণত হয়েছিল এক দুর্ভেদ্য দুর্গে, তখন জনগণের কণ্ঠস্বর হারিয়ে যাচ্ছিল কোলাহলের ভিড়ে। দুর্নীতির জাল বিস্তার করেছিল সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, আর সুশাসনের অভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠছিল ভঙ্গুর। এ বাস্তবতা আমাদের হৃদয়ে এক গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল, যে ক্ষত শুধু অর্থনৈতিক বঞ্চনার নয়, নৈতিকতারও।
আজ যখন নতুন দিনের বাতাস বইছে, তখন আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব হলো এ বাতাসকে কেবল পরিবর্তন হিসেবে দেখা নয়, এটিকে ইতিহাসের এক কঠোর শিক্ষক হিসেবে বরণ করে নেওয়া। কারণ, যে জাতি তার অতীতের ভুলগুলো থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, সে জাতি অনিবার্যভাবে সেই ভুলগুলোরই পুনরাবৃত্তি ঘটায়। আমাদের অতীতের ভুলগুলো ছিল মূলত প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, জবাবদিহির অভাব এবং দলীয়করণের বিষবৃক্ষ রোপণ করা। আমরা দেখেছি, কীভাবে বিচার, প্রশাসন ও শিক্ষাব্যবস্থায় দলীয় আনুগত্য প্রাধান্য পেয়েছে মেধা ও সততার ওপরে। এ ভুলগুলোর মাশুল দিয়েছে দেশের সাধারণ মানুষ, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম।
একটি নতুন ভোরের প্রতিশ্রুতি নিয়ে, আমাদের এখন দৃঢ়তার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে, ক্ষমা আর বিস্মৃতি এক জিনিস নয়। ক্ষমার উদারতা থাকতে পারে, কিন্তু বিস্মৃতি আনবে কেবল ধ্বংস। তাই এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে, আমাদের প্রধানতম কাজটি হওয়া উচিত অতীতের সেই অশুভ বীজগুলোকে চিহ্নিত করা, যা আমাদের জাতীয় জীবনের মূলকে দুর্বল করে দিয়েছিল। আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো সেই ভুলগুলোর ব্যবচ্ছেদ করা, যাতে আমরা কেবল আবেগতাড়িত পরিবর্তন নয়, বরং সুচিন্তিত, দৃঢ় ও স্থায়ী সংস্কারের পথে হাঁটতে পারি। একটি সত্যিকারের নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি করতে হলে, আমাদের কেবল ইট-পাথর ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে তাকালে চলবে না; আমাদের নজর দিতে হবে নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ই¯পাত-দৃঢ় কাঠামো নির্মাণের দিকে। এই পথ ধরেই, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
একটি রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হলো তার প্রতিষ্ঠানগুলো। অতীতে আমাদের সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর মধ্যে ছিল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর দুর্বলতা ও সেগুলোর ক্রমাগত রাজনৈতিকীকরণ। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা, এই প্রতিটি স্তম্ভকে ক্ষয় করা হয়েছিল। যখন একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দলীয় আনুগত্যের ঊর্ধ্বে উঠতে পারে না, তখন জনগণের আস্থা ভেঙে যায় এবং শাসনব্যবস্থা তার কার্যকারিতা হারায়। এ পরিস্থিতিতে, একটি নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরির জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন হলো সাংবিধানিক ও আইনি সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বশাসিত ও জবাবদিহিমূলক করে তোলা।
প্রথমত, বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। বিচারকের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে নির্বাহী বিভাগ থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের হাতে ন্যস্ত করতে হবে, যাতে মেধা ও সততা প্রাধান্য পায়, দলীয় বিবেচনা নয়। দ্বিতীয়ত, প্রশাসনিক কাঠামোকে বিকেন্দ্রীকরণ করা অত্যন্ত জরুরি। ক্ষমতার অতি-কেন্দ্রিকতা দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী প্রবণতাকে উৎসাহিত করে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী ও আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করে জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সত্যিকার অর্থে স্বাধীন করা, যাতে তারা নির্ভয়ে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। ইসির সদস্যদের নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত সার্চ কমিটি এবং তাদের সুরক্ষায় আইনি কাঠামোর জোরদারকরণ এখন সময়ের দাবি। এই মৌলিক সংস্কারগুলো ছাড়া কোনো পরিবর্তনই দীর্ঘস্থায়ী হবে না, কারণ অস্থায়ী স্থিতিশীলতা কখনোই স্থায়ী উন্নয়নের সমার্থক হতে পারে না।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের ভুলগুলো ছিল আরও বিধ্বংসী। দুর্নীতি, লাগামহীন লুটপাট এবং আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিয়েছে। বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ এবং অর্থ পাচার (মানি লন্ডারিং) আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরকে গভীর সংকটে ফেলেছে। যখন ঋণ পরিশোধ না করেও ক্ষমতাবানরা পার পেয়ে যান, তখন তা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না, সমাজের নৈতিক ভিত্তিও নড়িয়ে দেয়। নতুন ভিত্তি তৈরির জন্য প্রয়োজন অর্থনৈতিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এর জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) স¤পূর্ণ স্বাধীন করা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে শক্তিশালী আইনি ক্ষমতা দেওয়া উচিত, যাতে তারা যেকোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে। ব্যাংকিং খাতে কঠোর তদারক নিশ্চিত করা এবং ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। স¤পদ আহরণের উৎস (সোর্স অফ ফান্ড) যাচাই করার কঠোর প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। জনগণের টাকায় পরিচালিত প্রতিটি প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী অডিট এবং মনিটরিং ব্যবস্থা স্থাপন করা। জনগণের করের অর্থের অপব্যবহার হলে কঠোর শাস্তির বিধান রাখতে হবে। অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা না থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারায় এবং দেশের উন্নয়ন গতি মন্থর হয়। অতীতের ভুলগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, উন্নয়ন তখনই টেকসই হয়, যখন তা নৈতিকতার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে থাকে, দুর্নীতির পাহাড়ের ওপর নয়।
নৈতিকতার পুনর্জাগরণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, সর্বোপরি, আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল শিক্ষাব্যবস্থাকে কেবল সনদ-সর্বস্ব করে তোলা এবং নৈতিক শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হওয়া। জাতির মেরুদ- সোজা রাখতে হলে প্রয়োজন এমন একটি প্রজন্ম, যারা জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি মূল্যবোধে উজ্জীবিত। নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি হবে নৈতিকতার ওপর। শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে সমালোচনা করার মানসিকতা, বিজ্ঞানমনস্কতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। পাঠ্যক্রমে এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যা শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে, যারা কেবল নিজেদের অধিকার নয়, কর্তব্য স¤পর্কেও সচেতন। সমাজের প্রতিটি স্তরে, বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতৃত্বে, ত্যাগ ও সততার আদর্শ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, কেবল ভালো আইন ও প্রতিষ্ঠান নয়, ভালো মানুষ-ই একটি ভালো রাষ্ট্র তৈরি করতে পারে। অতীতের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি এড়াতে হলে এ পুনর্জাগরণ অপরিহার্য। প্রিয় পাঠক দীর্ঘ আলোচনাই অতীতের ভুলগুলোকে চিহ্নিত করেছে এবং একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও নৈতিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়েছে।
আমাদের এ দীর্ঘ পথচলায় আমরা দেখেছি, জাতি হিসেবে আমরা কেবল ভবিষ্যৎমুখী নই, আমরা আমাদের অতীতকে ধারণ করেই এগিয়ে চলি। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা: একটি নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি শীর্ষক এ পথপরিক্রমা শেষে এ কথা ¯পষ্ট, আমাদের আজকের সংকট কোনো আকস্মিক বিপর্যয় নয়; এটি মূলত দীর্ঘদিনের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়, নৈতিক স্খলন এবং সুশাসনের প্রতি উদাসীনতার সম্মিলিত ফসল। নদী যেমন বারবার বাঁক নেয়, তেমনি জাতিগত জীবনেও আসে পরিবর্তন। আজকের এই সন্ধিক্ষণ কেবল ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি আমাদের সম্মিলিত চেতনার এক ঐতিহাসিক পুনর্বিন্যাস।
আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে রাজনৈতিকীকরণের বিষবৃক্ষ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষুণè করেছে। আমরা দেখেছি, কীভাবে অর্থনৈতিক সুশাসনের অভাব এবং লাগামহীন দুর্নীতি দেশের আর্থিক মেরুদ-কে দুর্বল করেছে, ফলে সাধারণ মানুষ আস্থাহীনতা ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে। অতীতের প্রতিটি ভুলই একটি কঠোর শিক্ষকের মতো আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এ ভুলগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার অর্থ হবে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিকে আমন্ত্রণ জানানো। তবে, আশার কথা হলো, ভুলের অন্ধকার যত গভীরই হোক না কেন, তার পাশেই থাকে আলোর রেখা। আজকের এ পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হলো জনগণের, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের, নৈতিক জাগরণ এবং ন্যায়ের প্রতি অদম্য আকাক্সক্ষা। এই আকাক্সক্ষাকে সম্মান জানাতে হলে আমাদের আর কোনো অস্থায়ী সমাধান বা দায়সারা সংস্কারের পথে হাঁটা চলবে না।
নতুন বাংলাদেশের স্থায়ী ভিত্তি রচনার জন্য আমাদের আলোচনার তিনটি মূল স্তম্ভকে এখন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে: প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর পুনর্নির্মাণ: বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার মাধ্যমেই জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। দলীয় আনুগত্যের বদলে মেধা ও নিরপেক্ষতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। অর্থনৈতিক নীতির পুনর্বিন্যাস: অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা, কঠোর তদারকি এবং ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি গ্রহণের মাধ্যমে আর্থিক খাতে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। নৈতিকতার পুনর্জাগরণ: শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক পরিসরে মানবিক মূল্যবোধ, সমালোচনা করার ক্ষমতা এবং সততার আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি নৈতিক প্রজন্ম তৈরি করাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
একটি নতুন বাংলাদেশ কোনো স্বপ্নে তৈরি হয় না; এটি তৈরি হয় সংগঠিত কর্ম, সম্মিলিত অঙ্গীকার এবং অতীতের ভুলের প্রতি নির্মোহ আত্মসমালোচনার মাধ্যমে। মুহূর্তটি আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ, যাতে আমরা কেবল শাসকের পরিবর্তন না ঘটিয়ে, শাসনের চরিত্র পরিবর্তন করতে পারি। আজকের প্রত্যয় হোক এই, আমরা এমন এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং যেখানে সাম্য ও ন্যায়বিচার কেবল সংবিধানের পাতায় নয়, জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিফলিত। আসুন, আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাই সেই লক্ষ্যের দিকে, যেখানে ভুলের দীর্ঘশ্বাস থেমে যাবে এবং জন্ম নেবে আস্থা, মুক্তি ও প্রগতির এক নতুন জাতীয় পরিচয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন