ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. দিদার ফকিরের বিরুদ্ধে ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিদের সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ইউনিয়নের এক সচেতন নাগরিক ১৬ অক্টোবরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য দিদার ফকির হরিপদ ম-ল ও বাশাক ম-ল নামের দুই সাবেক বাসিন্দার ক্ষেত্রে প্রতারণামূলকভাবে ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে বলে অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, উল্লিখিত দুই ব্যক্তিকে ভুয়াভাবে তাদের ভাতিজা রতন ম-লকে একমাত্র ওয়ারিশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। সনদগুলোয় দুই ব্যক্তির মৃত্যু-তারিখ একই দিন (০১/০১/১৯৭০) দেখানো হয়েছে এবং সনদ নম্বর দেওয়া আছে ক্রমশ: ২০২২২৯১৯০১১০০১০৫৪ ও ২০২২২৯১৯০১১০০১০৫৩। স্থানীয়রা উল্লেখ করেন, ওই দুই ব্যক্তি প্রায় তিন দশক ধরে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সরে গেছেন এবং বাংলাদেশে তাদের বৈধ কোনো ওয়ারিশ নেই।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ইউপি সদস্য দিদার ফকির নিজস্ব মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদনের ওটিপি ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করেছেন, যা অভিযোগকারীর মতে জালিয়াতির প্রমাণস্বরূপ। অভিযোগপত্রে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দ-বিধির ৪৬৩ ও ৪৬৮ ধারায় মামলা করা যায় উল্লেখ করা হয়েছে (স্বার্থসংঘাত, জালিয়াতি ও সরকারি কাগজে মিথ্যা তথ্য প্রদান ইত্যাদি)।
অভিযোগ জানানো হলে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সূত্রে তা তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. দিদার ফকির অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বিশ্বাসঘাতক ষড়যন্ত্র বলতে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা জনপ্রতিনিধি; আমাদের অনেক শত্রু আছে, কেউ শত্রুতা করে এভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রবাদ করছে। আমি ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই।’
বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাহিন সংবাদকর্মীকে বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো জনপ্রতিনিধি এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।’
জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করে প্রশাসনিক ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি জানিয়েছেন। তদন্ত শেষে প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তারা জানান।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ আছে; অভিযোগের ফলাফল ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে তারা অপেক্ষায় আছেন। তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করে দ্রুত পর্যায়ক্রমিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন