বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আশরাফুল ইসলাম রাজন, কিশোরগঞ্জ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:৪৩ এএম

বালুর তলায় চাপা কৃষকের আর্তনাদ

আশরাফুল ইসলাম রাজন, কিশোরগঞ্জ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:৪৩ এএম

বালুর তলায় চাপা কৃষকের আর্তনাদ

  • নদ খননের আড়ালে চলছে বালু লুটপাট
  • চাষযোগ্য জমি নষ্ট, কৃষকরা বিপদে
  • প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রশাসন নীরব
  • প্রতিবাদে কৃষকদের হুমকি ও ভয়ভীতি

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের নারিকেলতলার চরে ব্রহ্মপুত্র নদ খননের নামে চলছে বালু লুটপাট। একসময় সবুজ ফসলের মাঠ ছিল যে চরে, আজ তা বালুর স্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ খননের কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। খননকৃত বালু অপসারণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ইজারা দিয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু ইজারার সীমা অমান্য করে তারা আশপাশের জমি থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছে ও বিক্রি করছে। এসব বালু রাখা হচ্ছে কৃষকদের ফসলি জমিতে, আর তুলতে গিয়ে নষ্ট করা হচ্ছে জমির উর্বর মাটিও।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, তাদের জমি ব্যবহার করা হলেও কোনো ভাড়া দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদ করলেই আসছে হুমকি। অভিযোগ জানিয়ে কোনো প্রতিকার মেলেনি প্রশাসনের কাছ থেকেও।

চরফরাদী মির্জাপুর বাজারের পশ্চিম পাশ ও নারিকেলতলার চর ঘাট এলাকায় প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলনের ইজারা দেওয়া হয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে।

স্থানীয় কৃষক আবদুল লতিফ বলেন, ‘আরেকবার যে বালু রেখেছিল, সেটা তুলে নিয়ে গেছে। এখন আবার পাঁচ ফুট গভীর করে তুলছে। আমাদের জমি শেষ হয়ে যাচ্ছে।’ কৃষক সুলতান উদ্দিনের অভিযোগ, ‘বছরের পর বছর বালু রাখা হচ্ছে। এখন জমির মাটিও নিয়ে যাচ্ছে।’ আরেক কৃষক গোলাপ মিয়া জানান, ‘আগে বিঘাপ্রতি ছয় হাজার টাকা দিত, এখন কিছুই দেয় না।’ কৃষক নূর ইসলাম বলেন, ‘এখন প্রভাবশালী নেতারা পুলিশ দেখিয়ে ভয় দেখায়, প্রশাসনও চুপ।’

স্থানীয় বাসিন্দা আরাফাত বলেন, ‘ধানক্ষেতের ভেতর দিয়ে ট্রাক চলে, রাস্তা ভেঙে গেছে, ধুলা-বালুতে চলাচল কষ্টকর।’ অভিযোগের বিষয়ে ইজারাদারের অংশীদার মো. রাসেল বলেন, ‘সরকারি খাসজমিতেই বালু রাখা হচ্ছে। অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএর খনন প্রকল্পের অধীনে উত্তোলিত বালু ইজারা দেওয়া হয় একটি কমিটির মাধ্যমে। অবৈধ বালু তোলা নিষিদ্ধ। দুটি অভিযোগ তদন্তাধীন, একাধিকবার জরিমানাও করা হয়েছে।’

স্থানীয়রা বলছেন, ব্রহ্মপুত্রের খনন নৌ-চলাচল ও পরিবেশের জন্য প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু সেই উন্নয়নের আড়ালে কৃষকের জীবিকা ধ্বংস হচ্ছে। নদ রক্ষার নামে কৃষকের পেটের ভাত কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, এমনই অভিযোগ উঠেছে ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!