ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

শসা খেতে ভাইরাসে দিশাহারা চাষি

মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

মেহেরপুরে ভাইরাস রোগে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা জমির শসাখেত। চারা লাগানো থেকে শুরু করে দীর্ঘদিন পরিচর্যা করে শসা বাজারজাত করার মুহূর্তে ভাইরাস রোগের কবলে পড়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। পাতা হলুদ হয়ে মাচাতেই শুকিয়ে যাচ্ছে গাছের ডগা ও শসার জালি। শসাখেত রক্ষায় বিভিন্ন প্রকার ওষুধ স্প্রে করেও উপকার পাচ্ছেন না চাষিরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলার হাজারও শসাচাষি।

শেষ মুহূর্তে শসাখেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, জমিতে বোরনের অভাবজনিত কারণে শসাখেত নষ্ট হচ্ছে। খেত রক্ষায় মাটি পরীক্ষা করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার তিনটি উপজেলায় চলতি সময়ে ২৬৫ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ হয়েছে। ৭ হাজার টন শসার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। যা মেহেরপুরের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের অন্য জেলার চাহিদা পূরণ করে এ অঞ্চলের শসা। উৎপাদিত শসা সুস্বাদু ও দেখতে সুন্দর হওয়ায় বাইরের জেলায় চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ভাইরাসজনিত রোগের কবলে পড়ে গাছ শুকিয়ে যাওয়ায় শসা উৎপাদন কম হচ্ছে। এতে চাহিদার তুলনায় উৎপাদনও কমে গেছে।

চাষিরা বলছেন, জমি প্রস্তত, মাচা তৈরি, সার-কীটনাশক ও পরিচর্যা বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অথচ এখন শসার উৎপাদন ও বাজারজাত করার সময়। অথচ খেতে ভাইরাসে গাছ শুকিয়ে সতেজতা নষ্ট হচ্ছে এবং শসার জালি বাঁকা হয়ে লালচে হয়ে ঝরে পড়ছে। প্রতিবছর যে পরিমাণ শসা উৎপাদন হয়, এ বছর তার অর্ধেকও হচ্ছে না। ফলে বাইরের জেলাতে এ অঞ্চলের শসার ব্যাপক চাহিদা থাকলেও চাহিদামতো শসা পাইকারি ব্যবসায়ীদের দিতে পারছেন না। বর্তমানে যে শসা উৎপাদন হচ্ছে তার হলুদ বর্ণের হওয়ায় চাহিদা নেই বাজারে। ফলে এ বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

কালিগাংনী গ্রামের চাষি আব্দুর রহিম বলেন, দুই বিঘা জমিতে শসা লাগিয়েছিলাম। জমি প্রস্তুত, মাচা তৈরি, সার-কিটনাশক মিলে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। এখন শসা বিক্রির উপযুক্ত সময়। অথচ শসার গাছ হলুদ হয়ে যাচ্ছে এবং শসার জালি শুকিয়ে বাঁকা হয়ে লালচে হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কিটনাশক ব্যবহার করেও গাছ ঠিক হচ্ছে না।

ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, প্রতিবছর এ সময় কয়েকশ টন শসা ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হতো। কিন্তু শসাখেতে ভাইরাস লাগায় এ বছর তার অর্ধেক শসাও পাঠাতে পারছি না।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেন বলেন, অতিরিক্ত রোদ, জমিতে বোরনের ঘাটতি ও একই জমিতে বারবার একই আবাদের কারণে শসাখেতে এমনটা হয়েছে। মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।