ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষে ব্যস্ত কৃষক

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০১:১১ এএম

পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রাজবাড়ী জেলা। মোট উৎপাদনের ১৪ শতাংশ পেঁয়াজ এই জেলায় উৎপাদিত হয়। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হলেও এ বছর কয়েক দফায় বৃষ্টিপাতের কারণে কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে। কৃষকদের কেউ জমি প্রস্তুত করছেন, কেউবা রোপণ বা সেচের কাজে ব্যস্ত। দেরিতে আবাদ শুরু হলেও ভালো ফলনের আশায় আশাবাদী তারা।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হবে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫০ হাজার টন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদিও বৃষ্টি কিছুটা বিলম্ব ঘটিয়েছে, তবু রাজবাড়ীর কৃষকরা হার মানেননি। আশায় বুক বেঁধে তারা মাঠে নেমেছেন নতুন সম্ভাবনার ফসল তুলতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, এবারের মৌসুমে রাজবাড়ীর পেঁয়াজ হতে পারে সোনার ফসল।

রাজবাড়ী সদর, কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে সকাল থেকেই দেখা গেছে কৃষকদের কর্মচাঞ্চল্য। সূর্য ওঠার আগেই কৃষকরা পেঁয়াজের জমিতে হাজির হয়ে যান। কেউ মুড়িকাটা চারা রোপণ করছেন, কেউ জমিতে পানি দিচ্ছেন। যারা আগে লাগিয়েছেন, তারা এখন গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত।

গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের পেঁয়াজচাষি রফিক বলেন, এ বছর বৃষ্টির কারণে রোপণে দেরি হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ। তবে পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় খরচ কম হচ্ছে আগের চেয়ে। এবার বিঘাপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায় চাষ করা যাবে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ মণ পর্যন্ত পেতে পারি।

তিনি আরও বলেন, গত বছর গুটি পেঁয়াজের দাম ছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা মণ, এবার তা ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে। ফলে খরচ অনেক কমেছে। তবে গত বছর লোকসান গুনতে হয়েছিল।

আরেক চাষি হাফিজ প্রামাণিক বলেন, এবার গুটি পেঁয়াজ সস্তা, কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবার সার আর সেচ খরচ বেড়েছে। বাজারে সার পাওয়া গেলেও দামও একটু চড়া।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে রাজবাড়ী তৃতীয় স্থানে আছে। দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ১৪ শতাংশই এই জেলায় হয়। সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবরের শুরুতে চাষ শুরু হয়। কিন্তু এ বছর টানা বৃষ্টিতে সময় কিছুটা পিছিয়েছে।

সারের দাম নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সারের দাম নিয়ে আমরা সজাগ। কোথাও কোথাও বাড়তি দাম নিলেও কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে যেন সরকারি নির্ধারিত দামে সার কেনেন। একই সঙ্গে ডিলারদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।