ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অসময়ে ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষ করে বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছেন মোস্তাকিম সরকার নামে এক কৃষক। স্থানীয় বাজারে ইতিমধ্যে বিক্রি শুরু করেছেন এই তরমুজ, যা পাইকারিতে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা ও খুচরায় ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে; মৌসুম শেষে বিক্রির পরিমাণ ৪ লাখ টাকা ছাড়াবে বলে আশা করছেন তিনি।
মোস্তাকিম সরকার উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুরপহেলা গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের ছেলে। তিনি আদমপুর গ্রামে ‘মায়ের দোয়া বহুমুখী কৃষি খামার’ নামে একটি মিশ্র সবজি ও ফলের বাগান পরিচালনা করছেন। তার এই খামারে প্রথমবারের মতো অসময়ে ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষে সফলতা পান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় সাজানো রয়েছে তরমুজের বাগান। তিন বিঘা জমিতে তিনি প্রায় আড়াই হাজার তরমুজের চারা রোপণ করেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিক পরিচর্যা করায় ফলন ভালো হয়েছে। চারা রোপণের ৬৫ দিনের মধ্যেই তরমুজ সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
প্রতিটি তরমুজের ওজন আড়াই থেকে তিন কেজির বেশি। পাইকাররা সরাসরি বাগান থেকেই কিনে নিচ্ছেন। উৎপাদন খরচ, জমি প্রস্তুত, ওষুধ, নেটজালসহ সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদে অন্তত ২ লাখ টাকার বেশি লাভের আশা করছেন কৃষক মোস্তাকিম।
তিনি বলেন, ‘গত আট বছর ধরে মৌসুমি সবজি ও ফল চাষ করছি। এবার অসময়ে তরমুজ চাষে দারুণ সাড়া পেয়েছি। কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করিনি, সবই জৈব উপায়ে করেছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জামশেদ মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আগে কেউ তরমুজ চাষ করেনি। মোস্তাকিম সাহসিকতার সঙ্গে নতুন জাতের তরমুজ চাষ করে সাড়া ফেলেছেন।’
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘আখাউড়ার মাটি ফল ও সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এখন কৃষকেরা ধানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ফল ও সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ব্ল্যাক বেবি তরমুজের সফল চাষে মোস্তাকিম এখন এলাকার এক অনুপ্রেরণাদায়ী কৃষক।’

