- সালিশদারদের নির্দেশে কাঁটার বেড়া দিয়েছেন অভিযুক্ত ইয়াছিন তালুকদার
 - স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের অন্যের বাড়ি ঘুরে যেতে হচ্ছে ক্লাসে
 - ইউএনও বললেন, অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে
 
ভোলার চরফ্যাশনে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক দিনমজুর পরিবারের চলাচলের পথ কাঁটার বেড়া দিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় তিন মাস ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে ওই পরিবারের ছয় সদস্য। স্থানীয় সালিশদারদের নির্দেশে কাঁটার বেড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইয়াছিন তালুকদার।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কবির তালুকদারের বাবা আব্দুল মালেক তালুকদার প্রায় এক মাস আগে চরফ্যাশন থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা মেলেনি।
গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনমজুর কবির তালুকদারের বসতঘরের সামনের চলাচলের পথে খাদ খুঁড়ে তার দুপাশে কাঁটার বেড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই পরিবারের। কবিরের কলেজ ও স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের অন্যের বাড়ির বাগান ঘুরে স্কুলে যেতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী কবির তালুকদারের স্ত্রী হোসনেয়ারা বলেন, ‘আমার স্বামী ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করেন। আমি তিন সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে বাড়িতে থাকি। চাচাতো দেবরের ছেলে ইয়াছিন তালুকদার জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সালিশদারদের নির্দেশে আমাদের চলাচলের পথে কাঁটার বেড়া দিয়েছে। তিন মাস ধরে আমরা একঘরে হয়ে আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখায় মেয়ের বিয়েও দিতে পারছি না। শিশুসন্তানদের স্কুলে যেতেও অন্যের বাড়ি দিয়ে যেতে হয়।’
অভিযুক্ত ইয়াছিন তালুকদার বলেন, ‘আমার সঙ্গে কবিরের জমি নিয়ে বিরোধ আছে। স্থানীয় সালিশদারদের নির্দেশেই আমি কাঁটার বেড়া দিয়েছি। সে আমার জমি বুঝিয়ে দিলে বেড়া তুলে নেব।’
সালিশ বৈঠকের নেতৃত্বদানকারী কামাল জানান, ‘জমির বিরোধ মীমাংসায় আমরা বহুবার চেষ্টা করেছি। শেষবারের বৈঠকে ইয়াছিনকে বলেছিলাম, ‘তুমি তোমার জায়গা দখল করে নাও।’ এর পরই সে কাঁটার বেড়া দেয়।’
চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সত্যতা যাচাই করা হয়েছে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ‘এ ঘটনা প্রথম আপনার কাছ থেকে জানলাম। পরিবারটি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

