- প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর পার হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি
- অবকাঠামোগত দুর্বলতা, নিরাপত্তা সংকট, ঋণপ্রাপ্তির জটিলতা
- শিল্পনগরীর চারপাশে নেই কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী
প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর পার হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরী। এক সময় সম্ভাবনার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও আজ তা পরিণত হয়েছে এক পরিত্যক্ত এলাকা ও ব্যর্থ উন্নয়ন প্রকল্পের উদাহরণে। অবকাঠামোগত দুর্বলতা, নিরাপত্তা সংকট, ঋণপ্রাপ্তির জটিলতা ও উদ্যোক্তাদের অনাগ্রহের কারণে শিল্পনগরীটি আজ ধুঁকছে প্রায় অচল অবস্থায়।
লালমনিরহাট শহরের উপকণ্ঠে ১৫ দশমিক ৬ একর জায়গা নিয়ে ১৯৮৭ সালে যাত্রা শুরু করে বিসিক (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন) শিল্পনগরী। শুরুতে ১০৭টি প্লট তৈরি করে ২৯ জন উদ্যোক্তাকে বরাদ্দ দেওয়া হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্লটের ব্যবহার অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে এই নগরীতে কার্যকর অবস্থায় রয়েছে মাত্র ৩০টির মতো প্রতিষ্ঠান। তার বেশির ভাগই আবার গুদামঘর, পরিত্যক্ত স্থাপনা কিংবা ভাড়ায় পরিচালিত ক্ষুদ্র ব্যবসা।
বিসিক শিল্পনগরীর চারপাশে নেই কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বা পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা। সন্ধ্যা নামলেই এলাকা ঘিরে ফেলে ঘোর অন্ধকার আর আতঙ্ক। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকাটি এখন মাদকসেবী, চোর ও দুষ্কৃতকারীদের আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় এক শ্রমিক বলেন, রাতে হলে ভয় লাগে ভাই। মাদকাসক্ত আর চোরেরা আসে। অনেক সময় এখানকার মালামাল চুরি হয়ে যায়। দায় নিতে হয় আমাদের।
বর্তমানে বিসিক নগরীতে চালু আছে মাত্র ৮ থেকে ১০টি ক্ষুদ্র কারখানা। যেমন হিমাগার, ফার্নিচার ও প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানা। তারাও টিকে আছে নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে।
বিসিক-এর প্লট পেয়েও বহু উদ্যোক্তা সেখানে কারখানা নির্মাণ করেননি। আবার কেউ কেউ শুরু করেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বন্ধ করে দিয়েছেন কার্যক্রম। জ্বালানি সংকট, বেহাল সড়ক ও ব্যাংক ঋণের অভাব, সব মিলিয়ে নতুন উদ্যোক্তারা এ জায়গায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
সিয়াম প্লাস্টিক সেন্টার উদ্যোক্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা করতে গেলে নিরাপত্তা, রাস্তা, বিদ্যুৎ সব কিছুর দরকার। এসব না থাকলে কেউ এখানে বিনিয়োগ করবে না। আমরা বিনিয়োগ করে কোনো রকমে দিন পার করছি।
শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমরা কিছু প্লট পুনঃবরাদ্দের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে নিরাপত্তা দেয়াল বা বড় অবকাঠামো নির্মাণে বাজেট সীমিত। লাইটিং ও নিরাপত্তাব্যবস্থা উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় করতে হবে।

