ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে বন্যহাতির মৃত্যু

কক্সবাজার ব্যুরো
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০২:০৯ এএম

*** তদন্তে বনবিভাগ

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার খয়রাতিপাড়া গ্রামে একটি বন্যহাতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজাপালং ইউনিয়নের খয়রাতিপাড়া এলাকার ধানি জমিতে হাতিটির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে বনবিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।

বনবিভাগ ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ফসল রক্ষার নামে পাতা অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে স্পর্শ হয়েই হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। হাতিটির শরীরে বৈদ্যুতিক স্পর্শ হওয়ার আলামতও পাওয়া গেছে বলে জানান তারা। সুরতহালে দেখা যায়, হাতিটির শুঁড়ে বৈদ্যুতিক তার প্যাঁচানো অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, ভোরের দিকে ধানি জমির পাশে হাতিটিকে পড়ে থাকতে দেখে তারা প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে খবর দিলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন ও উপজেলা ভেটেরিনারি চিকিৎসক ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেন।

যদিও বনবিভাগ এখনো নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর কারণ ঘোষণা করেনি, তারা বলছে, ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় ময়নাতদন্ত ও ল্যাব পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। হাতে পাওয়া আলামত, স্থানীয়দের বক্তব্য এবং ঘটনাস্থলের পরিস্থিতির ভিত্তিতে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।

স্থানীয় পরিবেশবাদীরা বলছেন, মানুষের ফসল রক্ষার নামে বৈদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহার শুধু অবৈধই নয়, এটি মানুষের জীবন ও বন্যপ্রাণীর জন্য মারাত্মক হুমকি। সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য ও আবাসস্থলের সংকটে হাতিরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এর ফলে মানুষ-বন্যপ্রাণীর দ্বন্দ্ব বাড়ছে এবং ঘটছে একের পর এক হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যু।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিহত হাতিটি পুরুষ এবং বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর। হাতির শুঁড়ে বৈদ্যুতিক তার প্যাঁচানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।

গত কয়েক বছরে উখিয়া-টেকনাফ রেঞ্জে হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতির ঐতিহ্যগত আবাসভূমি দখল, বন উজাড়, খাদ্য সংকট এবং অবৈধ কৃষিজমি সম্প্রসারণ এই সংকটকে আরও তীব্র করছে। এ ঘটনার পর এলাকায় তীব্র ক্ষোভ নেমে এসেছে।  স্থানীয়রা বলছেন, বারবার অভিযোগ করেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাতি হত্যার ঘটনা বাড়ছে। বনবিভাগ বলছে, তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।