ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

পিরোজপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা

পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০২:২১ এএম

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক জনকণ্ঠের জেলা সংবাদদাতা নাছরুল্লাহ আল-কাফী ও নাগরিক প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আরিফ বিল্লাহর ওপর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে আহত আরিফ বিল্লাহর ভাই শরিফ বিল্লাহ বাদী হয়ে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাসহ ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় ওই দুই সাংবাদিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মামলার আসামিরা হলেনÑ চ-ীপুর (খোলপটুয়া) গ্রামের হাবিবুর রহমান শেখের ছেলে যুবদল নেতা অহিদুল ইসলাম শেখ (৩৫), দক্ষিণ চ-ীপুর গ্রামের হারুন মৃধার ছেলে ছাত্রদল নেতা ফাইজুল ইসলাম তাওহিদ মৃধা (২১), পূর্ব চ-ীপুর গ্রামের আব্দুল আউয়াল বেপারীর ছেলে তানভীর আহমেদ রাকিব (২২), উত্তর কলারন গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে মো. জুয়েল হাওলাদার (৪০), পশ্চিম কলারন গ্রামের আলি আকবার তালুকদারের ছেলে বিএনপি কর্মী শাহাদাৎ হোসেন হিরু তালুকদার (৪৮), পশ্চিম চরবলেশ্বর গ্রামের মেনহাজের ছেলে যুবদল নেতা ফারুক হোসেন (২৮) ও আল আমিন শেখ (৪২)সহ আরও ২০-২৫ জন।

এর আগে গত রোববার উপজেলার চ-ীপুর এলাকায় সুপারি কেনাবেচা ও পরিবহন নিয়ে খবর সংগ্রহ করছিলেন ওই দুই সাংবাদিক। বিকেলে চ-ীপুর ইউনিয়ন বিএনপির একটি সমাবেশ চলছিল। এ সময় সাংবাদিকরা সুপারি ট্রাকে তোলা এবং বাজারসংক্রান্ত ভিডিও ধারণ করছিলেন। সমাবেশে উপস্থিতি কম থাকায় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী মনে করে সাংবাদিকরা তাদের ফাঁকা চেয়ারের ছবি তুলছেনÑ এমন সন্দেহে তারা ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং তাদের কাছে থাকা তিনটি মোবাইল ফোন, মাইক্রোফোন, ক্যামেরাস্ট্যান্ড, পেনড্রাইভ, প্রেসকার্ড, মানিব্যাগ ও তাদের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে রাতে দুজনকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত সাংবাদিক নাছরুল্লাহ আল-কাফী বলেন, আমরা চ-ীপুর আদর্শ বিদ্যালয় মাঠে সুপারি বাজারের ভিডিও সংগ্রহ করছিলাম। একই মাঠে বিএনপির সমাবেশ চলছিল। ঠিক সেই সময় তারা আমার সহকর্মী আরিফ বিল্লাহর ওপর অতর্কিত হামলা করে, তখন আমি তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাকেও মারধর করে এবং আমাদেও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে একটি ফোন উদ্ধার হয়।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফরিদ হোসেন বলেন, সমাবেশের পেছনে কিছু খালি চেয়ার ছিল। সাংবাদিকরা সেগুলোর ভিডিও করছিলেন মনে করে কিছু কর্মী উত্তেজিত হয়ে ধাক্কাধাক্কি করেছে। আমি নিজেও এগিয়ে গিয়ে তাদের রক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইন্দুরকানী থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোস্তফা জাফর বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।