বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার আলতাফনগর সরকারি শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নাসির আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। কলেজে যোগদানের পর থেকেই তিনি প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষে পরিবারের সদস্যসহ অবৈধভাবে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত করছে।
অধ্যক্ষ নাসির আহমেদ গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে অধ্যক্ষ (সংযুক্ত) হিসেবে কলেজে যোগ দেন। যোগদানের পর থেকেই প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষে স্থায়ীভাবে বসবাস এবং পাশের কক্ষে রান্নাঘর তৈরি করে ব্যবহার করছেন তিনি। এর বাইরে ঢাকায় কর্মরত স্ত্রীকে নিয়মিত এনে কলেজ কক্ষে থাকার সুযোগ দেওয়া ও বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করায় কলেজজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার মানেও বড় ধরনের অবনতি দেখা দিয়েছে। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় কলেজটির পাসের হার নেমে এসেছে মাত্র ৩০ শতাংশে, যেখানে ২০২৪ সালে এই হার ছিল ৬৭ শতাংশ।
এ ছাড়া কলেজের আসবাব ক্রয়েও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৯ নভেম্বর ২০টি হাইবেঞ্চ কেনার জন্য মেসার্স রুমান-মাসুম ফার্নিচার নামে একটি দোকানের ক্যাশ মেমো ও চালানের মাধ্যমে ২৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হলেও এখন পর্যন্ত কলেজে একটি বেঞ্চও আসেনি। সরেজমিন গিয়ে দুপচাঁচিয়ার চৌমুহনী বাজারে ফার্নিচারের দোকানটি বন্ধ পাওয়া যায় এবং মালিকের ফোনও বন্ধ ছিল।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ নাসির আহমেদ জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন; বেঞ্চ-সংক্রান্ত বিষয়ে অফিস সহকারী জানেন। অফিস সহকারী জিল্লুর রহমান বলেন, ‘২৪ হাজার টাকা দোকান মালিককে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বেঞ্চ কলেজে আসেনি।’
কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষের অবৈধ বাসস্থান, আর্থিক অনিয়ম, অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং দায়িত্বহীনতার কারণে কলেজে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি বেড়েছে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে। কলেজের পরিবেশ স্বাভাবিক করতে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
কলেজের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষক ও স্থানীয় সচেতন মহল।

