ভোলার চরফ্যাশনে ষাটোর্ধ্ব কৃষক সাইফুল্লার ৮০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মুজিব নগর ইউনিয়নের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ১৭০ শতাংশ জমির ধান কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
অভিযুক্ত দুই প্রভাবশালী হলেন, বাবলু হাওলাদার ও তার জামাতা জাফর বেপারি। তারা দুজনই মুজিবনগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী কৃষকও একই এলাকায় বসবাস করেন।
গত শনিবার ভোরে কৃষক সাইফুল্লা তার ক্রয়কৃত ১৭০ শতাংশ জমির ধান কাটতে গেলে বাবলু হাওলাদার ও তার জামাতা জাফর বেপারি বাধা দেন। এ ঘটনার ১০ দিন আগে ওই কৃষকের একই মৌজার ৮০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে নেন অভিযুক্ত শ^শুর-জামাই।
ভুক্তভোগী কৃষক সাইফুল্লা বলেন, ‘লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা অলিউল্লাহ মেলকার থেকে আমি চরমোতাহার মৌজার ৮৭৮ নম্বর খতিয়ানের সোয়া একুশ গোন্ডা (১৭০ শতাংশ) জমি ১৩ বছর আগে এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করে ৯৩ হাজার টাকা বায়নাচুক্তিতে চাষাবাদ করে আসছি। তবে জমির দলিল না দিয়ে বরং জমির ধান কেটে নিতে বাবলু হাওলাদার ও তার জামাতা জাফর বেপারির মাধ্যমে আমাকে ও আমার ছেলেদের হুমকি দিচ্ছে এবং একই মৌজায় তারা আমার ক্রয়কৃত ১৫৫ নম্বর খতিয়ানের ১০ গোন্ডা (৮০ শতাংশ) জমির পাকা ধান ১০ দিন আগে কেটে নিয়েছেন। ওই জমির কোনো প্রকার মালিকানা বাবলু হাওলাদার ও তার জামাই জাফর বেপারির নেই।
সাইফুল্লার কৃষক নীরব হোসেন বলেন, ‘আমি এক কানি (১৬০ শতাংশ) জমি কৃষক সাইফুল্লার কাছ থেকে নগদ টাকায় কট (ইজারা) নিয়েছি। ওই জমি সাইফুল্লার চাচাত ভাই আলমগীর মোল্লা মালিকানা দাবি করেন। যদিও দীর্ঘ বছর ধরে সাইফুল্লার দখলে আছে। বাবলু হাওলাদার গতকাল রোববার সকালে আমার মোবাইলে কল দিয়ে বলছেন, ‘এই জমি নিয়ে ঝামেলা আছে, যতদিন এই ঝামেলা চলবে ততদিন আমাদের মারফতে থাকব।’ আবার জাফর বেপারি বলছেন, ‘তুই ধান আমাকে দিবি। সাইফুল্লার থেকে কটের টাকা উঠাইয়া নিও। জাফর বেপারি আমার ধান আটকাইয়া রাখছে।’
একই মৌজায় কৃষক সাইফুল্লার কাছ থেকে নগদ টাকায় ১৬০ শতাংশ জমি কট (ইজারা) নিয়েছেন আরেক কৃষক হারুন। তিনি বলেন, ‘আমি এক কানি (১৬০ শতাংশ) জমি কৃষক সাইফুল্লার কাছ থেকে নগদ টাকায় কট (ইজারা) নিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আমার কট নেওয়া জমির মধ্যে জাফর বেপারি ৮ গোন্ডা (৬৪ শতাংশ) জমি দখল নেন। তিনি নাকি সাইফুল্লার কাছ থেকে জমি পাওনা আছেন।’
জানতে চাইলে অভিযুক্ত জাফর বেপারি বলেন, ‘সাইফুল্লার সঙ্গে আমাদের ৫ গোন্ডা (৪০ শতাংশ) জমির বিরোধ রয়েছে। এরা আওয়ামী লীগ করত, আমরা করছি বিএনপি। আওয়ামী লীগের সময় তারা আমাদের জমি জোর করে দখলে নিয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর ওই জমি আমরা দখলে নিয়েছি এবং আমাদের কাগজ আছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাবলু হাওলাদারের মুঠোফোনে একাধিক কল দেওয়ার পরেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
দুলারহাট থানা ওসি আরিফ ইফতেখার বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন